দু পাকিস্তানির নৈপুণ্যে কুমিল্লার জয়

স্টাফ রিপোর্টার: প্রথমে বল হাতে পাকিস্তানি হাসান আলীর ৫ উইকেট এবং পরবর্তীতে আরেক পাকিস্তানি শোয়েব মালিকের দায়িত্বশীল ৫৩ বলে অপরাজিত ৫৪ রানের কল্যাণে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটকে ৪ উইকেটে হারালো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথম ম্যাচ হারের পর এটি কুমিল্লার টানা পঞ্চম জয় ছিলো। তাই ৬ খেলায় ১০ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকাকে সরিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠলো কুমিল্লা। আর ৭ খেলায় ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে নেমে গেল ঢাকা।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রায় প্রত্যক ম্যাচেই উড়ন্ত সূচনা করা ঢাকা, এবার শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায়। কুমিল্লার পাকিস্তানি খেলোয়াড় হাসান আলীর বোলিং তোপে ১২ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মারকুটে ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের এভিন লুইস ও গত আসরে দুর্দান্ত ব্যাটিং করার মেহেদি মারুফ। লুইস ৭ রান করলেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে মেহেদিকে।

এরপর ৯২ রানের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার সুনীল নারাইন ও শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা। নারাইনের বিধ্বংসী ব্যাটিং এ এই জুটিতে বড় রান জড়ো হয়। মাত্র ৩০ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নারাইন। অপর প্রান্তে মাত্র ২৮ রান করতে পারেন সাঙ্গা।

সাঙ্গাকারা বিদায়ের পর ঢাকার আর কোনো ব্যাটসম্যানই দু’অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। কারণ হাসানের পেস তোপে দিশেহারা হয়ে পড়েন ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ সাদ্দাম ও শেষ ব্যাটসম্যান আবু হায়দারকে তুলে নিয়ে টি-২০ ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নেন হাসান। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার ছিলো ৩ দশমিক ৩ ওভারে ২০ রানে ৫ উইকেট। ৫ ব্যাটসম্যানকেই বোল্ড আউট করেছেন হাসান। হাসানের বিধ্বংসী বোলিং এ ১২৮ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকা। নারাইনের কল্যাণে এ স্কোর পর্যন্ত আসতে সমর্থ হয় ঢাকা। ৪৫ বল মোকাবেলা করে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন নারাইন।

জয়ের জন্য ১২৯ রানের মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে ঢাকার পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমিরের প্রথম দু’বলেই দুটি বাউন্ডারি তুলে নেন কুমিল্লার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দল নেতার ব্যাটিং দেখে উৎসাহি হতে পারেননি আরেক ওপেনার লিটন কুমার দাস। পরের ওভারেই শূন্য রানে ফিরেন তিনি। সতীর্থকে হারিয়ে নিজেকে দমিয়ে রাখেননি তামিম। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নারাইনের প্রথম বলে উইকেট ছেড়ে লং-অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান তামিম। কিন্তু পরের বলে একইভাবে মারতে গিয়ে স্টাম্পড আউট হওয়ার আগে করেন ১৮ রান। এরপর ইমরুল ও পাকিস্তানের শোয়েব মালিক দলের হাল ধরেন। কিন্তু জুটিতে ৩৫ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২০ রানে ইমরুল বিদায় নেবার পর এক প্রান্ত আগলে লড়াই করেন মালিক। তাকে যোগ্যভাবে সঙ্গ দিতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন ব্রাভো, ইংল্যান্ডের জশ বাটলার ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। কিন্তু তারপরও নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ছিলো অভিজ্ঞ মালিকের। সেই আত্মবিশ্বাসেই ২ বল বাকি থাকতেই কুমিল্লাকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দেন মালিক। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৩ বলে দায়িত্বশীল ৫৪ রান করেন মালিক। তার সাথে মেহেদি হাসান ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। ঢাকার পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির ও নারাইন।