টেস্ট ক্রিকেট তো এমনই

মাথাভাঙ্গা মনিটর: এ প্রশ্নের উত্তরে ডারবান টেস্টের চতুর্থ দিনটা বারবার দেখে নিলেই চলে। দুর্দান্ত ব্যাটিং, দাঁতে দাঁত চেপে লড়া, আবার এক ওভারের মধ্যে পুরো দিনের চেহারা বদলে দেয়া সবই দেখা গেল আজ। শেষের আলো নিয়ে নাটকটারও তাই দরকার হলো। হাজার হলেও আলো নিয়ে কথাবার্তাও তো টেস্ট ক্রিকেটের অংশ। আলোর অভাবে আজও আগেভাগে খেলা শেষ হলো। তাই জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার অপেক্ষা গড়ালো শেষ দিনে।

৪১৭ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরুটা যতটা সম্ভব খারাপ হয়েছে প্রোটিয়াদের। ৩৯ রানের মধ্যেই ডিন এলগার ও হাশিম আমলা আউট হয়ে গেলেন। ব্যাপারটা ভয়ংকর বিপদে রূপ নিল এইডান মার্করামের সুবাদে। অযথা রান নিতে ডাক দিয়েছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্সকে। উইকেট থেকে অনেক বেশি বেড়িয়ে যাওয়ায় আর সময়মতো ফিরতে পারলেন না এবি। ৯৩/৩-এ পরিণত হলো স্বাগতিক দল। চাপটা সামাল দেয়ার মূল দায়িত্ব ছিল যার, সেই ফাফ ডু প্লেসিও বিদায় ১০ রান পরে। প্যাট কামিন্সের দুর্দান্ত এক ইনসুইঙ্গার ব্যাট-প্যাডের মাঝের ফাঁকটা ঠিকই খুঁজে নিলো।

ডি ভিলিয়ার্সকে আউট করার দায়টা রান করেই মেটানোর সিদ্ধান্ত নিলেন মার্করাম। অপর প্রান্তে সঙ্গ দিলেন থিওনিস ডি ব্রুইন। ব্রুইনকে (৩৬) সঙ্গী করে ৮৭ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে নিলেন মার্করাম। কিন্তু চাপটা মাত্র সড়তে শুরু করেছে এমন অবস্থায় অলস এক শট ডি ব্রুইনের। ১৩৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা।

কুইন্টন ডি ককের ফর্ম বিবেচনা করলে এরপরই হাল ছেড়ে দিতে পারতেন মার্করাম। কিন্তু দুজনে মিলে এমনই পাল্টা আক্রমণ করলেন, টেস্টে প্রথমবারের মতো দিশেহারা দেখাল অস্ট্রেলিয়াকে। দারুণ স্ট্রোক প্লেতে যখন অবিশ্বাস্য এক জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করলো দক্ষিণ আফ্রিকা, তখনই ধাক্কা। স্টার্ক, কামিন্সদের অবলীলায় খেলা মার্করাম ক্যাচ দিলেন মিচেল মার্শের বলে। ১৪৩ রান করা মার্করামের বিদায়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটি থামল ১৪৭ রানে।

৫ উইকেটে ২৮৩ রান থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা যে কিছুক্ষণ পরে ৯ উইকেটে ২৯০ হয়ে গেল, সেটা মিচেল স্টার্কের কীর্তি। ৮০তম ওভারে স্টার্কের হাতে পুরোনো বলটা যেন হঠাৎ করেই হারানো যৌবন খুঁজে পেল। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা দুটি বলে রিভার্স সুইং, ফিল্যান্ডার কিংবা মহারাজের ক্ষমতা ছিলো না বল দুটো আটকানোর। রাবাদার পক্ষেও সম্ভব ছিল না স্টাম্প উপড়ে নেয়া আটকানো।

এর পর আরও ৯ ওভার খেলা হয়েছে। কিন্তু স্টিভ স্মিথকে হতাশ করে দিনটা পার করে দিয়েছেন ডি কক (৮১*) ও মরনে মরকেল। এতে অবশ্য আম্পায়ার ও আলোর ভূমিকাই বেশি। স্টার্কের ওই ওভারের পর যে পেসাররা বলই হাতে নিতে পারলেন না। স্মিথের নিষ্প্রাণ লেগ স্পিন আর লায়নের অফ স্পিন ঠিকই সামলে নিয়েছেন কক-মরকেল।

আজ আলোর অভাব হবে না, স্টার্ক-কামিন্সরাও তোপ দাগানোর জন্য নতুন উদ্যমে নামবেন। মাত্র ১ উইকেটেরই অপেক্ষা।