জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করলো ইংল্যান্ড

মাথাভাঙ্গা মনিটর: প্রথম তিন ম্যাচ জিতেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলে সফরকারী ইংল্যান্ড। চতুর্থ ওয়ানডে অস্ট্রেলিয়ার জিতলেও, গতকাল সিরিজের শেষ ম্যাচ ১২ রানে জিতে নিয়েছে ইংলিশরা। ফলে জয় দিয়েই ওয়ানডে সিরিজ শেষ করলো অ্যাশেজে ৪-০ ব্যবধানে হারা ইংল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতলো ইয়োইন মরগানের দল।

পার্থে টস জিতে ফিল্ডিং করার সদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিং-এ নেমে ৬৯ বলে ৭১ রানের উদ্বোধণী জুটি গড়েন ইংল্যান্ডের দুওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। এরমধ্যে ৪৯ রানই ছিলো রয়ের। তবে এই স্কোরেই থেমে যান তিনি। ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৬ বল মোকাবেলায় নিজের ইনিংস সাজান রয়।

রয়ের মতো আরেক ওপেনার বেয়ারস্টোও স্বাদ নিতে পারেননি হাফ-সেঞ্চুরির। ৪৪ রানে থেমে যান তিনি। রয় ও বেয়ারস্টোর মতো ছোট ইনিংস খেলেন তিন নম্বরে নামা অ্যালেক্স হেলসও। ৩৫ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। দুর্দান্ত শুরুর পরও ওপরের সারির তিন ব্যাটসম্যান হাফ-সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। কিন্তু চার নম্বরে ব্যাট হাতে নামা জো রুট ঠিকই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৬তম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন রুট। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের পর অন্যান্যরা বলার মত ইনিংস খেলতে না পারেননি। কারন অস্ট্রেলিয়ার পেসার এন্ড্রু টাই’র বোলিং তোপে পড়ে তারা। তবে ৪৭ ওভার পর্যন্ত উইকেটে টিকে থেকে ইংল্যান্ডকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেন রুট। মাত্র ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৮ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন রুট।

৪৮তম ওভারের প্রথম বলে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরে যাবার দু’বল পরই ২৫৯ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। রুটসহ প্রতিপক্ষের শেষ তিন উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচেই প্রথমবারের মত পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকারের নজির গড়েন টাই। ৪৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নিজের সেরা বোলিং ফিগারের দিন আরও একটি সুখবর পেয়েছেন তাই। এগারতম আইপিএলের নিলামে ৭ কোটি ২০ লাখ রুপিতে দল পেয়েছেন তিনি। প্রথমবারের মত আইপিএলের নিলামে নাম তোলা টাইকে দলে ভিড়িয়েছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

জয়ের জন্য ২৬০ রানের টার্গেটে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ভালো স্কোর করতে পারেননি। ডেভিড ওয়ার্নার ১৫ ও ট্রাভিস হেড ২২ রান করে আউট হন। তিন নম্বরে নামা মার্কাস স্টোয়িনিসের ব্যাটিং নৈপুন্যে অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা ঠিকই সচল ছিলো। স্টোয়িনিসকে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও মিচেল মার্শ। দু’জনে যথাক্রমে ১২ ও ১৩ রানের ইনিংস খেলেন। দলীয় ১৩৩ রানের মধ্যে তাদের বিদায়ের পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে রান তোলার কাজটা ভালোভাবেই করেছেন স্টোয়িনিস।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখছিলেন স্টোয়িনিস। কিন্তু স্টোয়িনিসের সেঞ্চুরির স্বপ্ন চুরমার করে দেন ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ। ৯৯ বলে ৮৭ রান তোলার স্টোয়িনিসকে শিকার করে ইংল্যান্ডকে খেলায় ফেরান রশিদ। এরপর অস্ট্রেলিয়ার লোয়ার-অর্ডারে তিনটি উইকেট শিকার করেন টম কারান। তাতে ম্যাচ হারের পথ দেখে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু উইকেটরক্ষক টিম পাইন দলের শেষ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে লড়াই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাইনের এই চেষ্টা বিফল করে দেন কারান।

দলীয় ২৪৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে পাইনকে তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন কারান। সেই সাথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তৃতীয় ম্যাচেই প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তি দেখান কারান। ম্যাক্সওয়েলের মতো পাইনও ৩৪ রান করে কারানের শিকার হন। ৩৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা কারান। সিরিজ সেরা হন রুট।