জাতীয় ভলিবল খেলোয়াড় রাশেদকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার কৃতীসন্তান সেনা সদস্য রাশেদ খান মেননকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পক্ষ থেকে মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু ফুলেল শুভেচ্ছা জানান মেননকে। সেনা সদস্য রাশেদ খান মেনন জাতীয় ভলিবল দলের সেরা খেলোয়াড়। এবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সিনিয়র মেনস সেন্ট্রাল জোন আন্তর্জাতিক ভলিবল টুর্নামেন্টে তিনি ১ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় ছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৪৫ বছর পর আন্তর্জাতিক আসরে শিরোপা এনে দিয়েছে তার দল।

রাশেদ খান মেনন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে। ৫ ভাই ও এক বোনের মধ্য রাশেদ সবার ছোট। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর তিনি ভলিবল খেলা শুরু করেন। সে সময় চিৎলা ইউপি চেয়ারম্যান তাকে এক সেট ভলিবল খেলার সরঞ্জাম দেন। গ্রামের মাঠে বন্ধুদের সাথে নিয়ে খেলা শুরু করেন। ২০০৭ সালে সিএইচআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধমিক পাস করার পর চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে ভর্তি হন। এরপরই সুযোগ পান জেলা ভলিবল দলে খেলার। ২০০৮ সাল থেকে তিনি নিয়মিত জেলা দলে খেলে সুনাম অর্জন করতে থাকেন। মাঝে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করেন। সুযোগ হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে দাঁড়ানোর। ব্যাস এতেই তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে। সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়ার পর তার খেলা দেখে পদস্থ কর্মকর্তারা রাশেদকে আর্মি ভলিবল দলে যোগ দেয়ার সুযোগ দেন। সেখানে নিয়মিত খেলার পর গত বছর নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ জাতীয় ভলিবল দলে খেলার সুযোগ পান। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সিনিয়র মেনস সেন্ট্রাল জোন আন্তর্জাতিক ভলিবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে বাংলাদেশ। এই দলে তিনি ১ নং জার্সি পরে খেলা করেন। ২৭ ডিসেম্বর মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় কিরগিজস্তানকে ৩-০ সেটে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ দল।

রাশেদ বলেন, এটা শুধু আমাদের জয় নয়। আমার জেলারও জয়। গোটা বাংলাদেশের জয়। আমি চুয়াডাঙ্গার সন্তান হিসেবে মনে করি চুয়াডাঙ্গাবাসীও জয়ী হয়েছে। কেননা এর আগে বাংলাদেশ কখনও কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সাফল্য পাইনি। শুরু থেকে আমাদের আশা ছিলো ফাইনালে খেলার। লক্ষ্য ছিলো শিরোপা ছিনিয়ে নেয়ার সে সুযোগ পেয়ে কাজেও লাগাতে পেরেছি। এ জয়ের আনন্দ আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তিনি যোগ করেন টুর্নামেন্টে দীর্ঘ গ্যাপ থাকলে আসলে টিম একটি ধারায় থাকে না। ক্রিকেট-ফুটবল এগিয়ে গেছে। কেননা তাদের পরিকল্পনা রয়েছে। ওদের বর্ষপঞ্জি আছে। আশা করি, এবার আমাদেরও একটা পরিকল্পনা থাকবে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, রাশেদ খান মেনন চুয়াডাঙ্গাবাসীর গর্ব। গ্রামপর্যায় থেকে আজ সে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলে জয় ছিনিয়ে এনে চুয়াডাঙ্গাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছে। তাকে শুধু ফুলেল শুভেচ্ছ নয়। প্রয়োজন বড় আয়োজন করে সংবর্ধনা দেয়া।