চুয়াডাঙ্গায় ব্যাপকহারে আলুর আবাদ : লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা

দামুড়হুদা অফিস: চুয়াডাঙ্গা জেলায় চলতি রবি মরসুমে ব্যাপকহারে আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। বাজারমূল্য না থাকায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, চলতি রবি মরসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলায় আলুর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ২৪ মে. টন। চাষিরা ইতোমধ্যে আলু তোলা শুরু করেছেন। এখন যেসব ক্ষেত থেকে আলু তোলা হচ্ছে বিঘা প্রতি ৫০ থেকে ৬০ মণ আলু হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। বিঘাপ্রতি লোকসান হচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকা। গত বছর চাষি ও ব্যবসায়ীদের আলু হিমাগারে রেখে ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়েছে। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ বছর আগেই আলু আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। শেষ দিকে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে কিছু কিছু জমিতে নাবিধসা রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। সেকারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কম হতে পারে। উপরন্ত বাজারে দাম কম থাকায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

বদনপুর গ্রামের আলুচাষি রবিউল আলম মন্টু জানান, গত বছর ১২ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করে বেশ লোকসান হয়েছিলো। এ বছর ৭ বিঘা জমিতে ডায়মন্ড ও কার্ডিলাল জাতের আলু আবাদ করেছি, উৎপাদন ভালো হবে; তবে বর্তমান যে বাজারদর তাতে করে খরচের অর্ধেক টাকা উঠবে না। ১ বিঘা আলু উৎপাদনে খরচ হয় ১৮-২০ হাজার টাকা, কিন্তু বর্তমানে বাজারদর অনুযায়ী বিঘাপ্রতি আলুর বিক্রয় মূল্য ১২-১৪ হাজার টাকা হতে পারে। জয়রামপুর গ্রামের আলুচাষি আহসান হাবিব তপন জানান, তিনি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করেছিলেন। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ১৬-১৮ হাজার টাকা। এখন আলু না তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দামুড়হুদা লোকনাথপুর আলুবীজ উৎপাদনকারী কনিকা সীড কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেডের পরিচালক নূর আলম লিটন জানান, তার ফার্ম থেকে চাষিদের মধ্যে সম্পূর্ণ টিস্যু কালচার পদ্ধতির আলুবীজ সরবরাহ করা হয়েছে। এ বছর ৫০০ টনেরও বেশি এ আলুবীজ চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ উত্তরবঙ্গের অনেক জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে। এতে চাষিরা সম্পূর্ণ ভাইরাসমুক্ত আলুবীজ বপন করে লাভবান হবে। আলুচাষিদের আলু উৎপাদনে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, চলতি বছরে ব্যাপকভাবে আলুর আবাদ হয়েছে। তবে চাষিদের উৎপাদন খরচও বেশি হয়েছে। আলু উৎপাদনের জন্য চাষিদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।