গাংনীর জোড়পুকুরিয়ায় হয়ে গেল নারী ফুটবল প্রীতি ম্যাচ

ঢাকা বিভাগ নারী দলকে হারিয়েছে খুলনা বিভাগীয় নারী দল
গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়মাঠে গতকাল সোমবার বিকেলে হয়ে গেল নারী ফুটবল দলের এক প্রীতি ম্যাচ। গ্রামাঞ্চলে নারীরা খেলবেন ফুটবল তাই তো এলাকার মানুষের মাঝে দেখা দেয় ব্যাপক আগ্রহ। মাঠের কানায় কানায় পূর্ণ দর্শকের সামনে নিজেদের সেরা নৈপূণ্য প্রদর্শন করে ঢাকা বিভাগ নারী ফুবটল দলকে টাইব্রেকারে ৪-১ গোলে হারিয়েছে খুলনা বিভাগীয় নারী ফুটবল দল।
বিকেল সোয়া চারটার দিকে খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন। গাংনী বিশিষ্ট রেফারি মাহবুবুর রহমান ও সহকারী রেফারি আব্বাস উদ্দীনের পরিচালনায় ৪.৩৩ মিনিটে খেলা শুরুর বাঁশি বাজে। শুরু থেকেই দু’দলের খেলোয়াড়দের মাঝে বল দখলে নেয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। প্রভাষক মহিবুর রহমান মিন্টু ও রাকিবুল ইসলামের প্রাণবন্ত ধারা বিবরণী দর্শকদের মাঝে অন্য মাত্রা যোগ করে। খেলার ৫মিনিট অতিবাহিত হতে না হতেই খুলনা বিভাগীয় দল ফ্রি কিক পেলেও ঢাকা বিভাগীয় দলের গোলরক্ষক রওশন আরা তা প্রতিহত করেন। এর এক মিনিট পরেই ঢাকা দল পূর্ব দক্ষিণ কোণ থেকে কর্ণার পায়। কিন্তু তাতেও গোল করতে ব্যর্থ দলের স্ট্রাইকাররা। বল দখলের লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে গোল শূন্য প্রথমার্ধ শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্যদিয়ে খেলা এগিয়ে যেতে থাকে। একেকটি গোল করার চেষ্টায় দর্শকরা চিৎকার করে পছন্দের দলের খেলোয়াড়দের সমর্থন জুগিয়েছেন। কিন্তু দর্শকদের হতাশ করেই গোলশূন্য ম্যাচ শেষ হয়। তবে নারী ফুটবল দলের সাবলিল, গোছানো ও পরিকল্পিত পাস দেখতে পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন দর্শকরা। ম্যাচ মীমাংসার জন্য খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। এতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ ঢাকা বিভাগীয় নারী ফুটবল দলের ৩ জন স্ট্রাইকার। ৪-১ গোলে খুলনা বিভাগীয় নারী দল জয়লাভ করে। খেলা শেষে কাপ ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। খেলা সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হাসান আলী নুরানী। তার তত্ত্বাবধানেই চমৎকার ব্যতিক্রমধর্মী ম্যাচের আয়োজন করে জোড়পুকুরিয়া মরসুমি ক্লাব। খেলা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেলোয়ার হোসেন, গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার (পিপিএম)সহ গণমান্য ব্যক্তিবর্গ। নারী ফুটবল খেলা তৃর্ণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া ও নারী ফুটবলারদের উৎসাহ দিতেই এই আয়োজন বলে জানালেন হাসান আল নুরানি।
খুলনা বিভাগীয় নারী দলের ফরোয়ার্ড যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাতেমা-তুজ-জোহরা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এতে দর্শক আমাদের খেলা দেখতে আসবেন তা কল্পনা করিনি। আমরা খুবই অভিভূত। নারীরা আজ অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে যাচ্ছে। ফুটবল খেলায়ও আমরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে পারছি। তবে এখনো প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে। পুরুষ ফুটবল দলকে যেভাবে মূল্যায়ন করা হয় এখনো আমাদের সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়না। ফুটবল খেলার মধ্যদিয়েই একজন নারী প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। তাই মেয়েদের ফুটবল খেলার দিকে নজর দেয়ার আহবান জানান তিনি।