ওয়ার্নারের রেকর্ডে প্রথম দিনেই অস্ট্রেলিয়ার ৪১৬

মাথাভাঙ্গা মনিটর: টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক করে ডেভিড ওয়ার্নার দাঁড়িয়ে আড়াইশর দোরগোড়ায়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পার্থ টেস্টের প্রথম দিনেই উড়ছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম দিন শেষে ২৪৪ রানে অপরাজিত আছেন ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টের প্রথম দিনে এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। টেস্ট ইতিহাসেও প্রথম দিনে এর চেয়ে বড় ইনিংস আছে আর একটিই, ১৯৩০ সালে হেডিংলিতে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের সেই বিখ্যাত ৩০৯!

এই নিয়ে টানা তিন ইনিংসে তিন অঙ্ক স্পর্শ করলেন ওয়ার্নার। ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় শুরু করা উসমান খাওয়াজা শতক করলেন টানা দুই টেস্টে। দুই বন্ধু জুটি গড়েছেন ৩০২ রানের! ওভার প্রতি সাড়ে চারের বেশি রান তুলে অস্ট্রেলিয়ার রান ৪১৬, হারাতে হয়েছে মোটে দুটি উইকেট! দিনের পূর্বাভাস ছিলো প্রভাতেই। নিজের প্রথম দু বলেই ট্রেন্ট বোল্টকে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেছিলেন ওয়ার্নার। সেই শুরু, একই গতিতে ছুটেছেন সারাদিন। অনেক চেষ্টাতেও রাশ টানতে পারেননি কিউই বোলাররা। জো বার্নসের সাথে ওয়ার্নারের নতুন উদ্বোধনী জুটি টানা তিন ইনিংসে ছুঁয়েছে শতরান। তবে টানা তৃতীয়বার পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি বার্নস। ম্যাট হেনরির বল স্টাম্পে টেনে এনে আউট হয়েছেন ৪০ রানে। লাঞ্চের একটু আগে ভেঙেছে ১০১ রানের উদ্বোধনী জুটি। আরেকটি সাফল্যের জন্য নিউজিল্যান্ডকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দিনভর। কিউই বোলারদের নাকের জল, চোখের জল এক করে ছেড়েছেন ওয়ার্নার ও খাওয়াজা। আগের টেস্টে দুই ইনিংসেই শতক করা ওয়ার্নার শতক ছুঁয়েছেন ১১৮ বলে।

২০১২ সালের জানুয়ারিতে এই মাঠেই ভারতের বিপক্ষে ১৮০ রানে আউট হয়েছিলেন ওয়ার্নার। এই সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রানে আউট হওয়ার পর বলেছিলেন একটি দ্বিশতকের জন্য আকুল হয়ে অপেক্ষার কথা। পরের টেস্টেই অপেক্ষা ফুরালো বিধ্বংসী এই বাঁহাতির। প্রথম শতকের মতো দ্বিতীয় শতকেও ওয়ার্নারের লেগেছে ঠিক ১১৮ বল। ২৩৬ বলের এই দ্বিশতক অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের তৃতীয় দ্রুততম দ্বিশতক।

খাওয়াজার টানা দ্বিতীয় শতক হয়ে গেছে এর আগেই। ইনিংসটায় ভাগ্যের সহায়তাও অবশ্য বেশ পেয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ২৩ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছেন, ৩৮ রানে কিপার ক্যাচ নিলেও নিশ্চিত আউট দেননি। ৬২ রানে তার শট ছক্কা হয়েছে সীমানায় ডগ ব্রেসওয়েলের হাত গলে। জোড়ালো আবেদন থেকে বেঁচে গেছেন আরও কয়েক দফায়। তবে এসবে ছন্দ একটুও নষ্ট হয়নি খাওয়াজার। ইনিংস জুড়েই খেলেছেন দৃষ্টিনন্দন সব শট। স্ট্রাইকরেটে পাল্লা দিয়ছেন ওয়ার্নারের সাথে। ১৩২ বলে ছুঁয়েছেন শতক। শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন দিনের খেলার মিনিট দশেক আগে। ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১৮৬ বলে ১২১। দিন শেষে ২২ চার ও ২ ছক্কায় ২৭২ বলে ২৪৪ করে অপরাজিত ওয়ার্নার, স্ট্রাইকরেট ৯০ ছুঁইছুঁই। দিনভর বেধড়ক পিটুনি হজম করেছেন সব কিউই বোলার। বল হাতে নিতে হয়েছে এমনকি অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামকেও!

কিউইদের স্বস্তি হয়ে এসেছে দিনের খেলা শেষের ঘোষণা। কিন্তু পরের দিনের জন্য আছে শঙ্কাও, ওয়ার্নার তো অপরাজিতই!