ইতালিকে হারিয়ে কোস্টারিকার ইতিহাস : বিদায় ইংল্যান্ড

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: ম্যাচশুরু আগে ইতালির স্ট্রাইকার মারিও বালোতেল্লি এক টুইটার বার্তায়লিখেছিলেন, ‘যদি আমরা কোস্টারিকাকে হারায়, সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের রানীদ্বিতীয় এলিজাবেথের কিস চাই, অবশ্যই তা হতে হবে গালে।’সেই বালোতেল্লিরদুটি মিসই পোড়ালো ইতালিকে, সেই সাথে ইংল্যান্ড কেউ। নিজেদের দ্বিতীয়ম্যাচে ইতালিকে হারিয়ে মৃত্যুকূপ উৎরালো কোস্টারিকা। হয়তবা গ্রুপচ্যাম্পিয়নও তারাই হচ্ছে! শুক্রবার রাতের প্রথম খেলায় রেসিফেমুখোমুখি হয় চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও এবারের বিশ্বকাপের প্রথমঅঘটনের জন্মদাতা কোস্টারিকা। ম্যাচে ইতালিকে ১-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়পর্বের টিকিট নিশ্চত করলো কোস্টারিকা। অন্যদিকে বিশ্বকাপ থেকে ইংল্যান্ডেরবিদায় নিশ্চিত হলো। এ খেলায় আজ্জুরিরা জিতলে কিছুটা হলেও আশা বেঁচে থাকতইংলিশদের।খেলার ৪৪ মিনিটের মাথায় বাম দিকে এ টুর্নামেন্টেরঅন্যতম সেরা একটি ক্রস বাড়ান জুনিয়র দিয়াজ। আর সেটিকে হেডের মাধ্যমে বুফনেরজালে জড়ান ১০ নম্বর জার্সিধারি রুজ। এর আগে ৩১ ও ৩৪ মিনিটের মাথায় দুটিদারুণ সুযোগ পান আজ্জুরি স্ট্রাইকার মারিও বালোতেল্লি। প্রথমবার তোগোলরক্ষককে ফাঁকায় পেয়ে যান। কিন্তু তার শটটি চলে যায় গোলপোস্টের অনেকবাইরে দিয়ে।প্রথম ম্যাচে দুই বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকেনাজেহাল করার পর চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে হারিয়েছে কোস্টা রিকা।ব্রায়ান রুইসের একমাত্র গোলের এ জয়ে মৃত্যুকূপ ‘ডি’গ্রুপে তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে রেখে সবার আগে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলো মধ্য আমেরিকার দেশটি।ছয়মাস আগে বিশ্বকাপের ড্র দেখে ফুটবলবোদ্ধাদের আফসোস ছিলো, ‘ডি’গ্রুপ থেকেতিনবিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে দুটি কেবল পরের রাউন্ডে যাবে। কোস্টা রিকারদাপটে এখন একটি নয়, দুটি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল নক-আউটহয়ে যাচ্ছে গ্রুপপর্ব থেকেই।কোস্টারিকারএই জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিদায় নিলো ইংল্যান্ড। আর শেষ ম্যাচে উরুগুয়ে-ইতালির ম্যাচেরওপর নির্ভর করবে এই দু দলের কোনটি সঙ্গী হবে কোস্টারিকার, আর কোনটি সঙ্গী হবে ইংল্যান্ডের।শুক্রবাররেসিফির আরেনা পের্নামবুকোয় প্রথম ত্রিশ মিনিট প্রতিপক্ষের শক্তি পরখ করে নিচ্ছিলো ইতালিও কোস্টারিকা। নিজেদের রক্ষণ সামলে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো দু দলই, এই সময়েতেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা।প্রথম সত্যিকারের সুযোগটি পেয়েছিলো ইতালি। ৩১তম মিনিটে আন্দ্রেয়া পিরলোর পাস থেকে বিপজ্জনকজায়গায় বল পেয়েছিলেন মারিও বালেতোল্লি। গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের মাথার ওপর দিয়ে পাঠালেওলক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।দু মিনিট পর আরেকটি সুযোগ পেয়েছিলেন বালেতোল্লি। পিরলোর ক্রসে চিয়াগো মোত্তার ফ্লিকখুঁজে পেয়েছিলো এসি মিলানের স্ট্রাইকারকে। এবার সরাসরি নাভাসের দিকে মেরে সুযোগটি হাতছাড়াকরেন এই মেজাজি স্ট্রাইকার।৩৭তম মিনিটে প্রথম সুযোগটি পায় কোস্টারিকা। ক্রিস্তিয়ান বোলানোসের শট ঝাঁপিয়ে পড়েব্যর্থ করে দেন জানলুইজি বুফ্ফন।৪৩তম মিনিটে কোস্টা রিকাকে পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করেন রেফারি এনরিকে ওসেস। বিপজ্জনকগতিতে ডি বক্সে ঢুকে পড়া হোয়েল ক্যাম্পবেলের সাথে ছিলেন কেবল জর্জো কিয়েল্লিনি। ইতালিরডিফেন্ডার তাকে ফেলে দিলেও পেনাল্টি দেননি রেফারি।পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় কোস্টা রিকা। বাঁ দিক থেকে জুনিয়র দিয়াসের বাঁকানো ক্রসথেকে ব্রায়ান রুইসের হেড ক্রসবারের নিচে লেগে গোললাইন অতিক্রম করলে উল্লাসে মেতে ওঠেকোস্টারিকা শিবির।সমতা ফেরাতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কোস্টারিকার রক্ষণভাগের ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করেচেজারে প্রানদেল্লির শিষ্যরা। তার ফল পেয়ে যাচ্ছিলো ইতালি, কিন্তু তাদের হতাশ করেন কোস্টারিকার গোলরক্ষক।৫১তম মিনিটে মাত্তেও দারমিয়ানের দূর পাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নাভাস।দু মিনিট পর পিরলোর ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি।এগিয়ে থাকলেও রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলেনি কোস্টা রিকা। ইতালির আক্রমণ ব্যর্থ করে দেয়ারপরক্ষণেই পাল্টা আক্রমণে যাওয়ায় নিজেদের রক্ষণও সামলাতে হচ্ছিলো ইতালিকে।ব্রাজিলবিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দু ম্যাচে শীর্ষ দশের দু দলকে হারালো কোস্টারিকা। আর ইংল্যান্ডেরসাথে না খেলেই বিদায় করে দিলো তাদের।