আশা জাগিয়েও বাংলাদেশের হার

৩৪ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে বিদায়করে বছরের প্রথম জয়ের আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কাইরন পোলার্ড ওদিনেশ রামদিনের দৃঢ়তায় হার এড়াতে পারেনি তারা।রথমওয়ানডেতে তিন উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ওয়েস্টইন্ডিজ।স্বাগতিকদের জয়ে বড় অবদান রামদিনের সঙ্গে পোলার্ডের ১৪৫ রানের বড়জুটির। অন্যদিকে বাংলাদেশ ইনিংসের শেষ দিকে রানের জন্য রীতিমত সংগ্রাম করতে হয়ব্যাটসম্যানদের।তবে এনামুল হকের শতকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে মোটামুটিলক্ষ্য দাঁড় করায় অতিথিরা।

বুধবার গ্রেনাডার সেন্ট জর্জে ন্যাশনাল ক্রিকেটস্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২১৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৩৯ ওভার৪ বলে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শুরুতে রানের জন্যসংগ্রাম করতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের। ষষ্ঠ ওভারে ক্রিস পেসার গেইলমাশরাফি বিন মুর্তজার বলে আল-আমিন হোসেনের হাতে ধরা পড়ার সময় স্বাগতিকদের সংগ্রহমাত্র ৯ রান।

দশম ওভারে মাশরাফির জায়গায় বল করতে এসেই সাফল্য পান আল-আমিন।ড্যারন ব্র্যাভোকে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচে পরিণত করেন এই পেসার।

১২তম ওভারেলেন্ডল সিমন্স ও ১৪তম ওভারে ডোয়াইন ব্র্যাভোকে ফিরিয়ে দিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরদাঁড়ায় ৩৪/৫। মাঝখানে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বোল্ড করেন কার্কএডওয়ার্ডসকে।

এরপরই অতিথিদের কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেন পোলার্ড ও রামদিন।৩৫তম ওভারের শেষ বলে রামদিনকে বোল্ড করে ২১ ওভার ৫ বল স্থায়ী জুটি ভাঙেন সোহাগগাজী। রামদিনের (৭৪) ৭৬ বলের ইনিংসটি সাজানো ৬টি চার ও ১টি ছক্কায়।

দলের রানদুইশ’ পার হওয়ার পর বিদায় নেন পোলার্ডও (৮৯)। আল-আমিনের চতুর্থ শিকারে পরিণত হওয়াএই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ৭০ বলের ইনিংসটি ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায়সমৃদ্ধ।

বাকি কাজটুকু সুনিল নারাইনকে নিয়ে সহজেই সারেন জেসনহোল্ডার।

এর আগে তামিম ইকবালের সঙ্গে এনামুলের ৪১ রানের জুটি বাংলাদেশকেসতর্ক সূচনা এনে দেয়। দশম ওভারে একবার জীবন পেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তামিম।হোল্ডারের বল পুল করতে গিয়ে পোলার্ডকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি।

তিননম্বরে নামা ইমরুল কায়েস বিদায় নেন দুর্ভাগ্যজনক রান আউট হয়ে। দুই রানের জন্য দৌড়শুরু করে এনামুলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে হওয়ায় সময় মতো পৌঁছাতে না পেরে ফিরেন এইবাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

নারাইনের বলে স্লিপে একবার জীবন পেলেও সুযোগ কাজেলাগাতে পারেননি চার নম্বরে নামা শামসুর রহমান। ডোয়াইন ব্র্যাভোর বল তার ব্যাট ছুঁয়েরামদিনের গ্লাভসে জমা পড়লে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অতিথিদের স্কোর তখন৮০/৩।

দুই অঙ্কে পৌঁছালেও নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি মুশফিক ওমাহমুদুল্লাহ। গেইলের বল সুইপ করতে গিয়ে নারাইনের ক্যাচে পরিণত হন মুশফিক। আরডোয়াইন ব্র্যাভোর বল প্যাডে লেগে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ।

ব্যাটিংপাওয়ার প্লের (৩৬-৪০) প্রথম ওভারটিই এনামুলের কাছ থেকে মেডেন নেন নারাইন। পাওয়ারপ্লের পরের চার ওভারে ১০ রানের বেশি নিতে পারেননি এনামুল ও নাসিরহোসেন।

ম্যাচের প্রথম অর্ধশত রানের জুটি উপহার দেয়ার পর বিদায় নেন নাসির। ৫৩রানের জুটিতে তার অবদান ২৬ রান।

এনামুলের জন্য ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে নিজেরউইকেট উৎসর্গ করেন সোহাগ। এই ব্যাটসম্যানের রান আউটের পর সেই ওভারেই ক্যারিয়ারেরতৃতীয় শতকে পৌঁছান এনামুল।

৭৪ বলে অর্ধশতকে পৌঁছানো এনামুল তিন অঙ্কে পৌছান১৩৩ বলে। শেষ বলে এলবিডব্লিউ হওয়া এনামুলের (১০৯) ১৩৮ বলের ইনিংসটি ১১টি চার ও ১টিছক্কা সমৃদ্ধ।

৩২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার ডোয়াইনব্র্যাভো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২১৭/৯ (তামিম ২৬, এনামুল ১০৯, ইমরুল ৯, শামসুর ৮, মুশফিক ১২, মাহমুদুল্লাহ ১১, নাসির ২৬, সোহাগ ২, মাশরাফি ৩, তাসকিন ০*; ডোয়াইন ব্র্যাভো ৪/৩২, গেইল ১/১৯, হোল্ডার ১/৩৯, রামপল১/৪৮)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৯.৪ ওভারে ২১৯/৭ (গেইল ৩, এডওয়ার্ডস ১০, ড্যারেনব্র্যাভো ৭, সিমন্স ০, রামদিন ৭৪, ডোয়াইন ব্র্যাভো ৫, পোলার্ড ৮৯, হোল্ডার ২২*, নারাইন ৩*; আল-আমিন ৪/৫১, মাহমুদুল্লাহ ১/২০, মাশরাফি ১/২২, সোহাগ ১/৪৬)