আম্পায়ারের এক সিদ্ধান্তেই শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক জয়!

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মাঠের আম্পায়ার ভুল সিদ্ধান্ত দিলেও এখন সান্ত্বনা খুঁজে পাওয়ার উপায় নেই। প্রযুক্তির সাহায্য এসেছে, রিভিউ পদ্ধতি এসেছে। আর সেখানে যদি ভুল করে বসেন খোদ তৃতীয় আম্পায়ার? আর সে এমনই এক ভুল, যার কারণে হেরে যেতে হয় যদি একটা টেস্ট ম্যাচ? জিম্বাবুয়ের জন্য মেনে নেয়া সত্যিই কঠিন। কলম্বোতে চার দিনেরও বেশি আধিপত্য ধরে রাখা টেস্টটা শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে হেরে গেল জিম্বাবুয়ে। ২০৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলকে ঐতিহাসিক এক জয় এনে দিয়েছেন ডিকভেলা (৮১) ও গুণারত্নে (অপরাজিত ৮০)। তবু এ দুজনকে ছাপিয়ে আলোচনায় তৃতীয় আম্পায়ার শামসুদ্দিনের ভূমিকা!

শামসুদ্দিনের এক সিদ্ধান্ত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিলো কি না, এই আলোচনা হচ্ছে। আর এই সুযোগটা মুঠোয় পুরে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। জিম্বাবুয়ের দেয়া ৩৮৮ রানের লক্ষ্য তারা পেরিয়ে গেছে প্রলম্বিত দ্বিতীয় সেশনেই। শ্রীলঙ্কার টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার নতুন রেকর্ড এটি। টেস্টের ১৪০ বছরের ইতিহাসেই চতুর্থ ইনিংসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে মাত্র চারটি। এর কোনোটিই উপমহাদেশে নয়।

শ্রীলঙ্কার এই জয়ের মূল অবদান ষষ্ঠ উইকেটে ডিকভেলা-গুণারত্নের ১২১ রানের জুটির। না হলে ভীষণ বিপদেই ছিলো শ্রীলঙ্কা। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ফিরেছেন প্রথম সেশনে। প্রথমে নিজের নামের পাশে মাত্র ৬ রান যোগ করে কুশল মেন্ডিস, পরে ৮ রান যোগ করে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। ২০৩ রানে ৫ উইকেট নেই। সেটি ২৩৭/৬ হওয়াই উচিত ছিল। ৩৭ রানে ব্যাট করার সময় সিকান্দার রাজার বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ডিকভেলা। রিপ্লেতে দেখা যায়, দাগের ওপরে ছিল ডিকভেলার পা। দাগের ভেতরে আনতে পারেননি। স্টাম্পিংয়ে ‘অন দ্য লাইন মানে’ পরিষ্কার আউট। কিন্তু ভারতীয় আম্পায়ার শামসুদ্দিন সবুজ বাতি জ্বালিয়ে দেন অবিশ্বাস্যভাবে। প্রথম সেশনে শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেট তুলে নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যেতে পারত জিম্বাবুয়ে। শেষ দুই সেশনে ৪টি উইকেট হলেই হতো তাদের। কিন্তু তা হলো না। উল্টো লাঞ্চের পর পঞ্চম ওভারে ডিকভেলাকে আরেকটি সুযোগ দিলেন উইকেটকিপার চাকাভা, ক্যাচ ফেলে। সেই ডিকভেলা শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৮১ রানে, শ্রীলঙ্কার স্কোর তখন ৩২৪। তখনো ৬৪ রান দরকার। কিন্তু বাকি কাজটা দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে নিরাপদে সারলেন গুণারত্নে।
তবে আগের জুটিতে মাঝখানে ৮৭টি রান যেভাবে এলো, জিম্বাবুয়ের চোখে তা অন্যায়। জিম্বাবুয়েরও দোষ আছে। বাজে ফিল্ডিং, সহজ ক্যাচ ফেলা, কিছুতেই কাজ হচ্ছে না দেখে লেগ স্টাম্পের বাইরে ক্রমাগত বোলিং করার নেতিবাচক কৌশল নেয়া। কিন্তু সব ছাপিয়ে আম্পায়ারের ওই একটা সিদ্ধান্ত। ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর টেস্টের ট্রফিটাও দেশে নিয়ে গেলে দেশটির ক্রিকেটের জন্য তা হতে পারত নতুন অক্সিজেনের সরবরাহ। একজনের কাছে যেটা ভুল সুইচ টিপে দেয়া, আরেকজনের কাছে সেটার দাম হয়তো জীবনের সমান!