আজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু: বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড মুখোমুখি

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: বাংলাদেশ ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আজ পর্দা উঠছে বিশ্বকাপের পরই মর্যাদাকর টুর্নামেন্ট আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরের। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টায় মুখোমুখি হবে দু দল। ‘এ’ গ্রুপের এই ম্যাচে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে চায় বাংলাদেশ- ইংল্যান্ড উভয় দলই। গত বিশ্বকাপের পর থেকেই বদলে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টাইগারদের পারফরমেন্সের গ্রাফটা উর্ধ্বমুখী। সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে রানারআপ হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে লন্ডনে পা রাখে মাশরাফির নেতৃত্বাধীন দলটি। ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের বড় সাফল্যে ছিলো টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডকে হারানো। এই জয়ে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাংকিং-এ সাত নম্বর থেকে ষষ্ঠস্থানে উঠে আসে টাইগাররা। তাই শতভাগ প্রস্তুত হয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা শুরু করবে বাংলাদেশ। যা চেয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর মাশরাফি বলেন, ‘এই ম্যাচটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। কারণ আমরা জানতাম, এটি জিতলেই র‌্যাংকিং-এ ছয়ে উঠবো আমরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে এমন একটি অর্জন অবশ্যই দলের জন্য ভালো।’ তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর প্রস্তুতি হিসেবে দুটি অনুশীলন ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪১ রান করেও ২ উইকেটে ম্যাচ হারে টাইগাররা। আর গতকাল ভারতের দেয়া ৩২৫ রানের টার্গেটে ৮৪ রানেই নিজেদের গুটিয়ে নেয় বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে দু’টি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচেই হার আত্মবিশ্বাসের জন্য এক দিক থেকে হয়তো গুরুত্বপূর্ণ। আবার গুরুত্বপূর্ণ নয় কেননা ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে দুটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচেও যে হেরেছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের কাছে ৩ উইকেটে ও আয়ারল্যান্ডের ৪ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিলো মাশরাফির দল। অসাধারণ পারফরমেন্স দেখিয়ে বিশ্বকাপ মঞ্চে ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়ে শেষ আটের টিকিট কেটেছিলো টাইগাররা। যেটি ইতোমধ্যেই ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ম্যাচের একটি হিসেবে গণ্য হয়েছে। তাই বড় মঞ্চে জ্বলে ওঠার সামর্থ্য বাংলাদেশের রয়েছে। অতীতেও এমন ঘটিয়েছে তারা। তাই অতীতের স্মৃতিতে রোমাঞ্চিত হয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও অসাধারণ কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এজন্য ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং এই তিন বিভাগেই জ্বলে উঠতে হবে বাংলাদেশকে। তাই ব্যাটিং-এ তামিম ইকবাল, বোলিং-এ মুস্তাফিজুর রহমান ও অলরাউন্ড ক্যাটাগরিতে সাকিব আল হাসানের দিকে চেয়ে থাকবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যেমন আত্মবিশ্বাসী, ঠিক তেমনি ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছে গত আসরের রানার্স-আপ ইংল্যান্ডও। চলতি সপ্তাহেই দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে ইংল্যান্ড। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিলো ইংলিশরা। তাই আত্মবিশ্বাসের দিক দিয়ে টুইটুম্বর হয়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়তে নামবে ইয়ন মরগানের দল। পাশাপাশি নিজেদের চেনা কন্ডিশনের সুবিধা তো থাকছেই ইংল্যান্ডের সামনে। তাই সবকিছু থাকার পরও শিরোপা জিততে না পারলে বড় হতাশা হবে বলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ইয়ন মরগান। এজন্য শিরোপা জয়ের মিশনে চমৎকার শুরুর প্রত্যাশায় ইংলিশ দলপতি মরগান, ‘ভালো শুরুর জন্যই মাঠে নামবো আমরা। দল হিসেবে শক্ত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। যে দল ভালো খেলবে তারাই জিতবে।’ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১৯ বার একে অপরের বিপক্ষে লড়েছে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড। এরমধ্যে ইংলিশদের জয় ছিলো ১৫টি ম্যাচে, বাংলাদেশে জিতেছে ৪ ম্যাচে। তবে আইসিসি নকআউট বা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মাত্র একবার মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড। ২০০০ সালের দ্বিতীয় আসরে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ওই ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছিলো ইংল্যান্ড।