৪৮ বছর পর ফের চালু হচ্ছে জীবননগর স্থলবন্দর

রোজিনা খাতুন: ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রায় ৪৮ বছর পর আগামী ২৪ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর নতুন করে স্থলবন্দরটি চালু হওয়ার এ খবরে জীবননগর উপজেলাসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ বিরাজ করছে।

এ স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৪৭ সালে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এ চেকপোস্টের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলেও ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসে বসে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। পরে এ চেকপোস্টের লোকবল অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। ২০০৮ সালে এ স্থলবন্দরটি পুনরায় চালু করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।

এ স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহজান  খাঁন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, কাস্টমস কর্মকর্তা, বিজিবি কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জেলা প্রশাসন একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং চালুর বিষয়ে মতামত প্রদান করেন।

দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হক বলেন, এ স্থলবন্দর চালু হলে সড়ক পথে দেশের অন্য যেকোনো স্থলবন্দরের তুলনায় ঢাকা-কোলকাতার দূরত্ব অনেক কম হবে। তিনি বলেন, ভারতের নবদ্বীপের ট্রানজিট রুট চৌরাস্তা থেকে যশোর বেনাপোল স্থলবন্দরের দূরত্ব ১শ’ ৭০ কিলোমিটার, সোনা মসজিদের দূরত্ব ৩শ’ ১৬ কিলোমিটার আর জীবননগরের দৌলৎগঞ্জ চেকপোস্টের দূরত্ব হবে মাত্র ৪৪ কিলোমিটার। এ কারণে দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দর চালু হলে আমদানি পরিবহন খরচ অনেক কম হবে এবং পচনশীল দ্রব্য জীবননগর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে অল্প সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। একই সাথে বেনাপোল স্থলবন্দরের ওপর চাপও কমবে। এছাড়া স্থলবন্দরটি চালু হলে ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনসহ কয়েকটি দেশের সাথে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং এ অঞ্চলের আর্থ-সামজিক অবস্থার উন্নতি হবে।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন, দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন আগামী ২৪ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহজান  খাঁন উদ্বোধন করবেন। এ ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থলবন্দরটি চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।