১৯৯৬ ও ২০০১ সালে যারা ছিলেন উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার: বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের মধ্যদিয়ে নতুন করে আলোচনায় এলেন ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারা। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা প্রস্তাব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। খালেদা জিয়া ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে ১০ জনকে নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এদের পাঁচজনের নাম বিএনপি এবং পাঁচজনের নাম আওয়ামী লীগ প্রস্তাব করবে। তার প্রস্তাবিত সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হবেন দু দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য‘ একজন ব্যক্তি। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানে যোগ হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি।  সাংবিধানিকভাবে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তার উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন- ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অধ্যাপক মো. শামসুল হক, সেগুফতা বখত চৌধুরী, এ জেড এম নাসিরউদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রহমান খান, অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ,ব্যবসায়ী নেতা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী এবং অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। হাবিবুর রহমান নেতৃত্বাধীন ওই সরকারের অধীনে সপ্তম সংসদ নির্বাচন হয়। এতে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। তখন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন খালেদা জিয়া। ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান। তার উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন- ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, বিচারপতি বিমলেন্দু বিকাশ চৌধুরী, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এসএম শাহজাহান, ব্যবসায়ী নেতা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, একেএম আমানুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক অডিটর জেনারেল এম হাফিজউদ্দিন খান, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মালেক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী এবং রোকেয়া আফজাল রহমান। ওই সরকারের অধীনে অষ্টম সংসদ নির্বাচন হয়। এতে বিএনপি-জামায়াত জোট বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। তবে কারচুপির অভিযোগ তোলে আওয়ামী লীগ। সংবিধান অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতেন পূর্বতন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু ২০০৬ সালে বিচারপতি কেএম হাসানকে মানতে আপত্তি জানায় আওয়ামী লীগ। এরপর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নেন। এতে রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়। দু বছর ক্ষমতায় ছিলো একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার, তবে মূল ক্ষমতা ছিলো সেনাপ্রধানের হাতে। এরপর সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দিলে তার আলোকে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত করে বর্তমান সরকার।