হাতিরঝিলে ঝাঁপ : প্রেমিকা বাঁচলেও বাঁচলো না প্রেমিক

স্টাফ রিপোর্টার: স্বপ্ন ছিলো তাদের একসাথে ঘর বাঁধার। একসাথে বেঁচে থাকার। মরলেও একসাথে মরার। সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না কারোরই। একজন জীবন দিয়ে ভালোবাসার ঋণ শোধ করলো। অন্যজন মরতে গিয়েও পারেনি। প্রেমিক যুগল তন্ময় আর মীম। বয়সে দুজনই কিশোর। স্কুলের সহপাঠী। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। তারপর দিন দিন প্রেমকে পরিণত করার চোখে স্বপ্ন। আজীবন একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্তে বাদ সাধলো পরিবার। জোর করে প্রেমিকাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অটল প্রেমিকযুগল। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাসা থেকে পালিয়ে যায় তারা। রাতভর এলোমেলো এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা শেষে দুজনের সিদ্ধান্ত আত্মহত্যা করার। জীবনে বেঁচে থেকে যদি একে অপরকে না পাই মরে পরকালেই এক হবো। এমন সিদ্ধান্ত থেকে নেয় তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত। ভোরে হাতিরঝিল ব্রিজের ওপর থেকে দেয় পানিতে ঝাঁপ। প্রথমে প্রেমিক, তারপর প্রেমিকা। মরতে চেয়েও বেঁচে গেলেন প্রেমিকা। বাঁচলো না প্রেমিক, অমর প্রেমের উদাহরণ হয়ে রইলো সে। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি গতকাল ভোরের। প্রেমিকের নাম এহসানুল হক তন্ময় (১৬) ও প্রেমিকার নাম শেহরীন রহমান মীম (১৬)। দুজনই মগবাজারের প্রভাতী বিদ্যা নিকেতনের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মীমকে রাখা হয়েছে পুলিশ হেফাজতে। ময়নাতদন্তের জন্য তন্ময়ের লাশ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।

পুলিশ জানায়, গতকাল ভোরে হাতিরঝিলের রামপুরা অংশের এক নম্বর ব্রিজের ওপর থেকে প্রথমে পানিতে ঝাঁপ দেয় তন্ময়। তারপর মীমও ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ সময় পাশেই সুমন নামে এক নিরাপত্তাকর্মী শব্দ শুনে দৌড়ে এসে মীমকে হাবুডুবু খেতে দেখে চিৎকার করেন। আশপাশের লোকজন এসে লেকে দড়ি নামিয়ে দেয়। মীম দড়ি ধরে তীরে উঠলেও ডুবে যায় তন্ময়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে লেক থেকে তন্ময়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে।