হরিণাকুণ্ডুর চেয়ারম্যান ছমিরের দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে ৯ মেম্বারের সাংবাদিক সম্মেলন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীনের আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন পরিষদের ৯ জন ইউপি সদস্য। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে মেম্বারদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান।
তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীন মাসিক মিটিং না করে সন্ত্রসী কায়দায় পরে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে গোপনে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। ইউপি সদস্যদের ভাষ্যমতে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে এলজিএসপির ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকার কাজ কোনো সদস্যদের না জানিয়ে আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীন। সরকারি ৫০টি টিউবওয়েল এক হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়ে দরিদ্র মানুষের দিয়েছেন। ভিজিডির ২০৩টি কার্ড মেম্বারদের ৫টি করে দিয়ে বাকিটা বিক্রি করে দিয়েছেন। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির ১৪৮টি কার্ড মেম্বারদের ৩টি করে দিয়ে বাকি কার্ডপ্রতি ২-৩ হাজার টাকা করে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। কর্মসৃজনের টাকা ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজসে আত্মসাৎ করেছেন। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের কোনো জব কার্ড দেয়া হয়নি। লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মাতৃত্বকালীন ভাতা’র কার্ড ৩ হাজার করে বিক্রি করেছেন চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীন। ১০ কেজি চালের ৬৪১টি কার্ডের মধ্যে মেম্বারদের দিয়েছেন মাত্র ২০টা করে। বাকি কার্ড অবস্থাশালী ব্যক্তিদের কাছে বিক্রি করেছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, ৫১৬, ৫২১, ৫২৪, ৫২৬, ৫৩৯, ৫৪২, ৫৪৫, ৫৪৬, ৫৫০, ৫৩১সহ ৩০টি ১০ কেজি চালের কার্ড দালান বাড়ি ও সচ্ছল ব্যক্তিদের দেয়া হয়েছে, যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে পড়বে। এছাড়া একই পরিবারের ৫ ভাইকে ১০ কেজি চালের কার্ড দেয়া হয়েছে। যাদের কার্ড নং ৫৫৬, ৫৬৭, ৫৫৮, ৫৫৯ ও ৫৬০। এছাড়া হরিণাকু-ুর কালীশংকরপুর গ্রামে ৫৯৪ থেকে ৬৩৪ নং কার্ড প্রদানের তথ্য খাতা কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই। এ কার্ডের চাল চেয়ারম্যান ছমির নিজেই লুটপাট করেন বলে অভিযোগ করা হয়। এছাড়া ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে হাট ইজারা ও ওয়ান পার্সেন্টের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। টিআর প্রকল্প আসলে মেম্বারদের জানানো হয় না। প্রকল্প শেষে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মেম্বারদের স্বাক্ষর করিয়ে নেন চেয়ারম্যান ছমির। সাংবাদিক সম্মেলনে আম্বিয়া খাতুন, জেসমিন, ফাতেমা খাতুন, তরিকুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, টিটো মোল্লা, বদরুজ্জামান ও নাসির উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে হরিণাকু-ু উপজেলার ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ছমির উদ্দীন বলেন, মেম্বারা তার কাছে সরকারি টাকার ৪০ভাগ ভাগ চান। আমি তাদের কথায় রাজি হয়নি বলে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাংবাদিক সম্মেলন করেছে। তিনি আরও বলেন, আমি নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান। আমি কোন দুর্নীতিকে পশ্রয় দেই না। মেম্বারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপন করেছে তার কোনো ভিত্তি নেই বলেও তিনি দাবি করেন।