হরতালের প্রথম দিন ঝিনাইদহে ৩ জনসহ ২৪ জন গুলিবিদ্ধ : মেহেরপুরে ৮টি ককটেল বিস্ফোরণ

চুয়াডাঙ্গায় হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে একের পর এক মিছিল : বিএনপির মিছিলগুলোতে পুলিশি বাধা

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি বর্ষণ, যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মধ্যদিয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকা টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে। আজ দ্বিতীয় দিন। এদিনে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে জোরালো পিকেটিঙে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিলো। বাস-ট্রাক চলেনি। তবে করিমন নসিমন ও অটো রিকশা চলেছে। চুয়াডাঙ্গায় অটো রিকশায় ইটমারার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে।

হরতাল চলাকালে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে পিকেটারদের হামলায় অটোরিকশা উল্টে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। রাজধানীর বাইরে ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলায় সহিংসতায় কমপক্ষে ২৪ জন গুলিবিদ্ধসহ দু শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। চুয়াডাঙ্গায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ৪ জনকে গ্রেফতার করার খবর পাওয়া গেলেও পুলিশ অবশ্য শেষ পর্যন্ত ৩ জনের গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেছে। বরিশালে বিএনপি দলীয় কাউন্সিলর আকবর হোসেনসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশ বিরোধী জোটেরপ দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ঈশ্বরদী, চাটমোহর ও লালপুরে রেললাইন উপড়ে ফেলায় সংশ্লিষ্ট রুটগুলোতে ট্রেন চলাচল কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপিসহ একাধিক অংশ জোরালো পিকেটিং করে। মেহেরপুর ও ঝিনাইদহেও হরতালের পক্ষে বিপক্ষে মিছিল হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার অধিকংশ মিছিলই পুলিশি বাধার মুখে পড়ে।
ঢাকা অফিস জানিয়েছে, হরতাল চলাকালে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরিত হলেও কেউ হতাহত হয়নি। অন্যান্য হরতালের তুলনায় বেশি সংখ্যক যানবাহন চলাচল করে। বেশিরভাগ দোকানপাট খোলা ছিলো। সচিবালয়সহ অধিকাংশ অফিস-আদালতে হাজিরা ও কার্যক্রম ছিলো প্রায় স্বাভাবিক। হরতাল আহ্বানকারী দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের রাজপথে দেখা যায়নি। হরতাল সমর্থনে পিকেটিংকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। হরতাল চলাকালে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় হরতাল সমর্থকরা। রাত পৌনে ৮টার দিকে ফকিরাপুলে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে শিবির কর্মীরা। মিছিল থেকে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এক পর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে রাজধানীর তোপখানা রোড থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত ঝটিকা মিছিল বের করে শিবিরকর্মীরা। এ সময় সচিবালয় লক্ষ্য করে পরপর ৩টি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। সকালে বিএনপির ৫ মহিলা এমপি সংসদভবনের দক্ষিণ প্লাজার পাশে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে। এ সময় তারা স্লোগান দিয়ে রাস্তার দিকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। হরতালের সমর্থনে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। সমাবেশ থেকে বিএনপির গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এমপি। সমাবেশ থেকে সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবীর বাসায় আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে তল্লাশির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

১৮ দলীয় জোটে ডাকা হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি উদ্যোগে পিকেটিং মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পিডাব্লিউডি অফিসের সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সহসভাপতি এম জেনারেল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক অ্যাড.ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আ.স.ম আব্দুর রউফ, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মণ্টু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম রতন, সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক মালিক মজু, জেলা যুবদল যুগ্মআহ্বায়ক মোশারেফ হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শরিফ-উর জামান সিজার, জেলা ওলামা দলের সভাপতি ফজলুর রহমান, জেলা জাসাসের সভাপতি শহিদুল হক বিশ্বাস, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফণ্টের সভাপতি সুশীল কুমার দাস, জেলা যুবদলের সদস্য আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, মখলেছুজ্জামান, রবিউল ইসলাম লিটন ও মামুন রেজা সবুজ, আরিফুজ্জামান পিণ্টু, ফারুক মল্লিক, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক এম.এ তালহা, যুগ্মআহ্বায়ক রাজিব খান, সুজন মালিক প্রমুখ। প্রধান অতিথি বলেন, অবিলম্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মেদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, এমকে আনোয়ারসহ সকল রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করেন এবং ৮৪ ঘণ্টার হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার আহ্বান জানান।

অপরদিকে হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির একাংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। মিছিলটি কোদারগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করে। সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা পৌর ১৮ দলীয় জোটের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম মনি। প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জেলা বিএনপি একাংশের সভাপতি মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাড. এসএম শাহাজাহান মুকুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম বকুল, যুগ্মসম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক রউফুন নারা রীনা, আইন বিষয় সম্পাদক অ্যাড. হেদায়েত হোসেন আসলাম, পৌর জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল, জামায়াতে ইসলামী নেতা মফিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সহসভাপতি আওরঙ্গজেব বেল্টু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হাজি আব্দুল মান্নান, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্মআহ্বায়ক শাহাজাহান খান, ইসলামী ছাত্র শিবিরের জেলা সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম প্রমুখ। বিক্ষোভ মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে একটি থ্রিহুলার ভাঙচুর করে নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বজরুকগড়গড়ি মাদরাসাপাড়ার তাসের উদ্দিনের ছেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদল নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক আবু, স্বেচ্ছাসেবক দলের হাফিজুর রহমান মুক্ত ও জিনতলাপাড়ার সাথক মণ্ডলের ছেলে আজিম।

অপরদিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরিসভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জেলা বিএনপি একাংশের সভাপতি মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস। রোববার শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করায় জেলাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীদিনের হরতাল  শান্তিপূর্ণভাবে পালনের আহ্বান জানান এবং বিএনপির শীর্ষ  নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়। সভায় ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

সারাদেশে জামায়াত-বিএনপির হরতাল নৈরাজ্যের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের উদ্যোগে হরতাল বিরোধী মোটরসাইকেল মিছিল বের করা হয়। এ সময় মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চুয়াডাঙ্গা চৌরাস্তার মোড়ে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আরেফিন আলম রঞ্জু, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানিম হাসান তারেক,  যুগ্মআহ্বায়ক আশাদুজ্জামান কবির, ছাত্রলীগ নেতা শাহাবুল, সুস্তির, রাসেল, খালিদ, হিমেল, রাজু প্রমুখ।

অপারদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগ হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় শহীদ হাসান চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফ হোসেন দুদু। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলী আহম্মেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক হাবিবুর রহমান লাড্ডু, যুব ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফি, ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহরব হোসেন, ৭ নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু, অ্যাড. ফিরোজ আহম্মেদ, মতিয়ার রহমান মতি, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শরিফ উদ্দিন, মেহেদী, যুগ্মসম্পাদক ফরিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ফরিদ আহম্মেদ, সদর থনা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লাল্টু, কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিপ্লব, সাধারণ সম্পাদক কালু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ভুলন, বুলবুল, ইসা, শিমু, সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা, সাধারণ সুমন রেজা, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি জাবিদ, সাধারণ সম্পাদক স্বজল, কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জানিফ, জেলা ছাত্রলীগের স্বজল, রাজা, শান্তি, বেজীয়, ফয়সাল, মধু, খালেক, সিহাব, হাসান, মাফি, রুবেল, তাওরাত, নোন্তা, তাপু, জাহাঙ্গীর, হাসিবুল, হালিম,   সামাদ, ইমরান, আলামিন, বিপ্লব, জ্যাকি, এজাজ, জনি প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, যারা অহেতুক হরতাল দিয়ে জনগণের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দেশে ও দেশের জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করছে তারা দেশ  ও জাতির শত্রু। আগামী সংসদ নির্বাচনে সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে তা ঠেকানোর জামায়াত-বিএনপির কোনো ক্ষমতা নেই। সমাবেশটি পরিচালনা করেন জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রিংকু হোসেন জোয়ার্দ্দার।

এদিকে হরতাল চলাকালে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ হরতালের সমর্থনে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতালের সমর্থনে প্রথম দিনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি আদালত প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের দিকে যেতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়। মিছিল শেষে কোর্ট চত্বরের সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক আব্দুল ওহাব মল্লিক ও ইসলামী ল-ইয়ারস কাউন্সিলের সভাপতি. মসলেম উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্মসদস্য সচিব ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম.এম. শাহজাহান মুকুল, জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি সাঈদ মাহমুদ শামীম রেজা ডালিম, জাহাঙ্গীর আলী, আব্দুল গফুর, আবু বকর সিদ্দিক, মোজাম্মেল হক, সিরাজুল ইসলাম, আকরাম হোসেন, ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, আ.স.ম আব্দুর রউফ, সৈয়দ হেদায়েত হোসেন আসলাম, অ্যাড. মইন উদ্দিন মঈনুল, আনছার আলী, রফিকুল ইসলাম-১, আব্দুল খালেক, বদিউজ্জামান, হানিফ উদ্দিন, একলাচুর রহমান কাজল, মমতাজ বেগম, আব্দুল্লাহ আল মামুন এরশাদ, আহসান আলী, আসাদুজ্জামান আসাদ, হুমায়ুন কবীর মামুন, খন্দকার অহিদুল আলম মানি, হেমায়েত উল্লাহ বেল্টু, জিল্লুর রহমান জালাল, মাসুদ পারভেজ, এসএম হুমায়ুন কবীর, মশিউর রহমান পারভেজ, মোমিনুল হাসান পলাশ, রুবিনা পারভীন ও রুহুল আমীন।

বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ দাবি করে বক্তারা বলেন, কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াসহ গ্রেফতারকৃত বিএনপির শীর্ষ পাঁচ নেতার মুক্তি দাবি করা হয়। এছাড়া নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়।

হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে পিকেটিং মিছিল বের করা হয়। বেলা ১১টার দিকে মিছিলটি কোর্টমোড়স্থ কার্যালয় থেকে বের হয়ে কোর্ট ট্রাফিক মোড়ে পৌঁছুলে পুলিশের বাধায় পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক আইনুর হোসেন পচা। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হবি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মৎস্যজীবীদলের আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বকুল, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আরশেদ আলী কালু, মৎস্যজীবীদলের সাধারণ সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম ওহিদ, জেলা কৃষকদলের সভাপতি হামিদুল হক নেতাজী, পৌর বিএনপর যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, আলমডাঙ্গা থানা মৎস্যজীবীদলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান বাবু, আলমডাঙ্গা থানা তৃণমূল দলের আহ্বায়ক শামিম আল মামুন প্রিন্স, যুগ্মআহ্বায়ক আশরাফুল আলম, জেলা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক আত্তাব উদ্দিন পিণ্টু প্রমুখ। সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদল নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক ও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হাফিজুর রহমান মুক্তসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে সমাবেশে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিলো। দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল করে হরতাল সমর্থকরা। এ সময় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে হরতালের পক্ষে স্লোগান দেয়। হরতালের সমর্থনে ভোরে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা শহরের হামদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল বের করে। পুলিশ মিছিলে ৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও দুটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে ৩ শিবিরকর্মী আহত হয়। এ সময় জামায়াতের পিকেটাররা অন্তত ১০টি ট্রাক ভাঙচুর করে। সদর উপজেলার বিষয়খালী বাজারে দুটি ট্রাক ভাঙচুর করেছে শিবিরের পিকেটাররা। হরতালকে কেন্দ্র  করে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু, শৈলকুপা ও কালীগঞ্জ থেকে ৭ বিএনপি নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের মধ্যে।

ঝিনাইদহ অফিস আরও জানিয়েছে, হরতালে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পিকেটিংকালে আটক ছাত্রদল ও যুবদলের ৩ নেতাকে এক মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন এ দণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- সদর উপজেলার কালীচরণপুর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম (৩৫), শহরের হামদহ খোন্দকারপাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইদ মাহমুদ মোমিন (৩০) ও শহরের বনানীপাড়ার শফিকুল ইসলামের ছেলে যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম (৩১)।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দীন আহমেদ জানান, রোববার দুপুরে শহরের হামদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পিকেটিংকালে ট্রাক ভাঙচুরের অভিযোগে ওই তিন নেতাকে আটক করা হয়। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে তাদের এক মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত। দণ্ডাদেশপ্রাপ্তদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি জানান।

এদিকে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে ঝিনাইদহে হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। রোববার সকালে শহরের এইচএসএস সড়ক থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে পায়রা চত্বরসহ বিভিন্ন বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে মিছিলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নেয়। পরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে দলীয় নেতাকর্মীরা। সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ, আব্দুল খালেক, আক্কাস আলী, মাহমুদুল ইসলাম ফোটন, কাজী এনামূল হক মিলন, অশোক ধর, আসাদুজ্জামান, নজরুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, খাইরুল ইসলাম, বিশ্বজিত সাহা মিথুন সহ নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বক্তারা বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, হরতালের প্রথম দিনে গতকাল রোববার মেহেরপুরের ৪টি সড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। দুপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে বড়বাজার এলাকা থেকে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক আনছার-উল হকসহ ৪ জনকে থানা পুলিশ আটক করেছে। হরতালের শুরুতেই সকাল ৭টার দিকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের রাজনগর, মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের বন্দর ও গৌরীনগর এবং মেহেরপুর-কাথুলী সড়কের কায়েমকাটার মোড় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয়। রাজনগরে একটি ট্রাক ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ হরতাল পালনকারীরা। কায়েমকাটার মোড়ে ৭/৮টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কে বন্দরমোড় এলাকায় জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র হাতে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং কাঠের গুঁড়ি ফেলে ও বেঞ্চ আড় করে দিয়ে সড়ক অবরোধ করে। ওই সময় তারা একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা সরকারবিরোধী স্লোগান দেয় এবং আন্দোলন জোরদার করতে নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান। অবরোধের কারণে ওই সড়কগুলোতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির সিরাজুল ইসলাম মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের রাজনগর, জামায়াত নেতা তারিক মো. সাইফুল ইসলাম মেহেরপুর-কাথুলি সড়কের কায়েম কাটা মোড় এবং জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বন্দরের অবরোধ, মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশের নেতৃত্ব দেন। রাজনগরের অবরোধস্থলে জামায়াতের বিপুল সংখ্যক নারী সমর্থক লাঠি মিছিল করেন। তবে ওই সব স্থানে পুলিশকে কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মেহেরপুর শহরের শাহাজীপাড়াস্থ কার্যালয় থেকে আনছার-উল হকের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বড় বাজারে দিকে যাচ্ছিলো। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বড়বাজার এলাকায় জনতা ব্যাংকের কাছে পৌঁছুলে সদর থানা পুলিশ মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক আনছার-উল হক, জেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক প্রভাষক ফয়েজ মোহাম্মদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন মিন্টু ও জাতীয়তাবাদী তরুণদলের মেহেরপুর জেলা আহ্বায়ক কাজি মিজান মেননকে গ্রেফতার করে। নাশকতা সৃষ্টির আশঙ্কায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি রিয়াজুল ইসলাম। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এদের নামে থানায় কোনো মামলা নেই বলেও পুলিশসূত্রে জানা গেছে।

এদিকে হরতালে দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলার সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ ছিলো। তবে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। জেলা শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। অফিস আদালত খোলা থাকলেও লোকজনের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। স্কুল কলেজ খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিলো। ব্যাংক-বীমায় সন্তর্পনে লেন-দেন হয়েছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার্যালয় চত্বরে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসরাফ হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল কাউনাইন টিলু। প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াত নেতা নাগদাহ ইউপি চেয়ারম্যান দারুস সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর জব্বার, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান পিন্টু, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাসানুজ্জামান হাসান চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমদাদুল হক ডাবু, উপজেলা বিএনপি সহসভাপতি সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল হক, আজিবার রহমান, উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম, প্রচার সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, হারদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মইনুল ইসলাম, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান চমক, উপজেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক মিল্টন মল্লিক, মাগরিবুর রহমান, ওহিদুল ইসলাম বাবু, গোলাম হোসেন, নাসির উদ্দিন, শওকত খান, স্বেচ্ছাসেবকদলের বাকী বিল্লহ, ইউনুস, পৌর যুবদল নেতা মুকুল, মামুন, গোলাম, লাল্টু, বোরহান, আলাল, গোলাম বিশ্বাস, কাদের, ওল্টু, ছাত্রদল নেতা, তৌফিক খান, শওকত, লিমন, রহিদ, বাপ্পি, জনি, রাশেদ, তনু, শান্ত, ডালিম, সজীব, সুইট, উজ্জ্বল, রুবেল, সনি, সাগর, মানিক, তন্ময় আকরাম প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো আরও জানিয়েছে, হরতালের প্রথম দিনে উপজেলা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক শহিদুল কাউনাইন টিলুর নেতৃত্বে আলমডাঙ্গা শহরে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে হাজি মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম কমিটির যুগ্মআহ্বায়ক আব্দুল জব্বার। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক শহিদুল কাউনাইন টিলু। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুগ্মআহ্বায়ক দারুস সালাম চেয়ারম্যান, শুরা সদস্য বিল্লাল হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমদাদুল হক ডাবু, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসরাফ হোসেন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান পিন্টু, আলমডাঙ্গা উপজেলা জামায়াতের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস ও উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন হাসানুজ্জামান চেয়ারম্যান, বিল্লাল হোসেন, মইনুল হোসেন, আলী হোসেন,  ডা. আলা উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল হক, বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান চমক, উপজেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক মিল্টন মল্লিক, মাগরিবুর রহমান, ওহিদুল ইসলাম বাবু, গোলাম হোসেন, নাসির উদ্দিন, শওকত খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের বাকী বিল্লহ, ইউনুস, পৌর যুবদল নেতা মুকুল, শরিফুল, রফিকুল মামুন, গোলাম, লাল্টু, বোরহান, আলাল, গোলাম বিশ্বাস, কাদের, ওল্টু, ছাত্রদল নেতা, তৌফিক খান, শওকত, লিমন, রহিদ, বাপ্পি, জনি, রাশেদ, তনু, শান্ত, ডালিম, সজীব, সুইট, উজ্জ্বল, রুবেল, সনি, সাগর, মানিক, তন্ময় আকরাম প্রমুখ।

সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরতাল বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গতকাল রোববার দু দফা সরোজগঞ্জ বাজারে মোটরসাইকেল মিছিল করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। মিছিলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সহস্রাধিক নেতাকর্মী মোটরসাইকেল মিছিলে অংশগ্রহণ করে। মিছিলটি সরোজগঞ্জ বাজার, বদরগঞ্জবাজার, ডিঙ্গেদহ বাজার  প্রদক্ষিণ শেষে সরোজগঞ্জ ধানের হাটে গিয়ে শেষ হয়। সদর থানা যুবলীগের যুগ্মআহ্বায়ক নিলুয়ার হোসেনের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল মিছিলে অংশগ্রহণ করেন সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহাম্মদ হাসানুজ্জামান মানিক, সহসভাপতি আশিকুর রহমান আশিক, কেন্দ্র ছাত্রলীগের উপবিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুন্না, থানা ছাত্রলীগের যুগ্মসম্পাদক শংকর কুমার শর্মা, সাবেক ক্রীড়াসম্পাদক আজিজুল হক টুটুল, জাহিদুল, জাকির, জিল্লু, সবুর, শাহাবুল, মেহেদী, আক্তার, সুজন কুদ্দুস, গুরু মানিক, রুবেল, মসনাথ, জব্বার, মোমিন, ছোট জুয়েল, মেফুজ, ছোট মানিক প্রমুখ।

সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি আরও জানিয়েছেন, সরোজগঞ্জ বাজারে  বিক্ষোভ মিছিল  করেছে বিএনপি। মিছিলটি সরোজগঞ্জ শলক মার্কেটের সামনে থেকে বেরিয়ে বাসস্ট্যান্ডের নিকট পুলিশের বাধার মুখে ফিরে সরোজগঞ্জ খাদ্যগুদামের নিকট সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করে। জামায়াতের থানা আমির আব্দুর রউফ মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন কুতুবপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপি একাংশের সভাপতি সামদানি, সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন শেখ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।

ডাকবাংলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে গতকাল সকাল ৯টার দিকে সাধুহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আনামের নেতৃত্বে হরতালের সমর্থনে মিছিল হয়েছে। বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে নাথকুণ্ডু সড়কে সমাবেশ করে। বক্তব্য রাখেন বাজার যুবদলের সভাপতি নাহিদ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, যুবদলের প্রচার সম্পাদক রিপন, কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সেলিম রেজা মিলন, আফাঙ্গীর, বছির, জমির, আব্দুল গফুর, রাশেদুল প্রমুখ।

এদিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পশ্চিমশাখার উদ্যোগে ডাকবাংলা বাজারে গতকাল সকাল ৬টার দিকে ছাত্রশিবির একটি মিছিল করে। মিছিলটি নাথকুণ্ডু সড়ক থেকে শুরু হয়ে ডাকবাংলা জামে মসজিদে গিয়ে শেষ হয়। তবে মিছিলটি ১৫ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন সদর শাখা শিবির সভাপতি মো. নাজমুন হোসেন।

আমঝুপি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরতালের প্রথম দিনে গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। রাস্তায় টায়ার ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখে। এ সময় অবরোধকারীরা ৩টি মোটরসাইকেল ও একটি ট্রাক ভাঙচুর করে।

এদিকে বিএনপি নেতৃত্বধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৮৪ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে গতকাল রোববার ভোরে হরতাল সমর্থকরা পাবনার ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের সন্নিকটে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেললাইন উপড়ে ফেলে। এতে প্রায় ৬ ঘণ্টা উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকার রেল যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। রোববার সকাল ১০টার পর ওই রেললাইন মেরামত করা হলে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের শ্রীরামগাড়ি এলাকায় নাশকতার উদ্দেশে হরতাল সমর্থকেরা গ্যাস কাটার দিয়ে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেললাইনের বেশ কিছু অংশ কেটে রাখে। এর ফলে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সাথে ঢাকার রেল যোগাযোগ দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর ৪টার দিকে তারা জানতে পারেন শ্রীরামগাড়ি বেলতলা এলাকায় রেললাইন কেটে ফেলা হয়েছে। তারা সে সময় স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্দুস সাত্তারকে বিষয়টি মোবাইলফোনে জানান। সাত্তার মেম্বার পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। মেম্বার সাত্তার মোবাইলফোনে বাইপাস স্টেশন মাস্টারকে ঘটনাটি জানালে তিনি পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মুলাডুলি স্টেশনে থামিয়ে রাখেন।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলী-২ মনিরুল ইসলাম জানান, হরতালের সময় রেললাইন পাহারা দেয়ার জন্য আমরা জরুরি পেট্রোল ডিউটি রাখি। রাত্রিকালীন রনো পাহারাদারেরা ভোর ৪টার দিকে রেললাইন পাহারা দেয়ার সময় বিষয়টি দেখতে পায় এবং তারা মোবাইলফোনে জানায়। এরপর সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে জরুরিভাবে রেললাইন মেরামতের কাজ শুরু করি এবং সকাল ১০টার দিকে রেললাইন মেরামতের কাজ শেষ হয়। শনিবার রাতে কোনো এক সময় নাশকতার উদ্দেশে হরতাল সমর্থকেরা ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটের শ্রীরামগাড়ি বেলতলা এলাকায় ঈশ্বরদী আউটার সিগন্যাল থেকে ১০০ মিটার সিরাজগঞ্জের দিকে রেললাইন কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগরে কঠোরভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। উপজেলা শহরের হাসপাতাল রোড, লক্ষ্মীপুর ব্রিজ ও সন্তোষপুরে পিকেটিংকালে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা কয়েকটি করিমন-আলমসাধু ও পাউয়ার টিলার ভাঙচুর করে। হরতাল চলাকালে উপজেলা শহরের প্রায় সকল প্রকার দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একপ্রকার বন্ধ ছিলো। সরকারি অফিস, ব্যাংক ও স্কুল কলেজ খোলা থাকলেও উপস্থিতির হার ছিলো কম। হরতালে নাশকতা ঠেকাতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিলো।

গাংনীতে হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর গাংনীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বাসস্ট্যান্ড শহীদ রেজাউল চত্বরে সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়। হরতাল ও জামায়াত-বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে হরতাল বর্জনের স্লোগান দেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। হরতাল পালনে রাজপথে না নামতে হুশিয়ার করা হয় বিক্ষোভ মিছিল থেকে। উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুল, আওয়ামী লীগ নেতা গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আয়ুব আলী, জেলা যুবলীগের যুগ্মসম্পাদক সোহেল আহম্মেদ, উপজেলা যুবলীগের যুগ্মসম্পাদক মজিরুল ইসলাম ও আনোয়ার পাশা, আওয়ামী লীগ নেতা হাজি মহসিন আলী, কাউন্সিলর কামরুজ্জামান ডাবু, ইয়াছিন রেজা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল আলিম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ক্লাবের সভাপতি আশিকুর রহমান আকাশ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন লীগের সভাপতি বাবুল আক্তার, সহসভাপতি জিনারুল ইসলাম দিপু ও পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক আহম্মেদসহ নেতৃবৃন্দ।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে, হরতালের সমর্থনে দর্শনায় বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। গতকাল রোববার বিকেলে দর্শনা পুরাতন বাজার থেকে (জেলা বিএনপি একাংশের সহসভাপতি হাজি ইঞ্জি. মোখলেসুর রহমান তরফদার টিপু সমর্থিত) দামুড়হুদা উপজেলা ও দর্শনা পৌর বিএনপির যৌথ একাংশ পক্ষ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি দর্শনা রেলবাজারের দিকে যাওয়ার পথে রেলগেটে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। রেলগেট থেকে ফিরে দর্শনা পুরাতন বাজার মোড়ে করেছে সমাবেশ। পৌর বিএনপির সভাপতি রহম আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল ইসলাম খোকন, সোহেল তরফদার, শাহীন প্রমুখ।