স্বামী হারানোর ৪১ বছর পর ভাসুরপুত্রের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন ৫ মেয়ের মা রহিমা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ভুলটিয়ার রহিমা খাতুন তার স্বামী আত্তাব ম-লকে হারানোর দীর্ঘ ৪১ বছর পর ভাসুরপুত্রদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ মামলায় আইনগত সহায়তার জন্য চুয়াডাঙ্গার মানবতা ফাউন্ডেশনে লিখিতভাবে আবেদনও করেছেন ৫ কন্যার জননী ৪১ বছর আগে স্বামী হারানো রহিমা খাতুন।
রহিমা খাতুন বলেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ও তার পরবর্তীতে হত্যার স্বীকার হয়েছেন এরকম ব্যক্তিদের পরিবার বর্তমান সরকার আমলে বিচার পাচ্ছেন শুনে আমিও আমার স্বামী হত্যার বিচারের জন্য আশায় বুক বেধেছি। কেননা, ওই সময় নাবালিকা ৫ কন্যাকে বড় করে তোলার জন্যই সেই সময় ভাসুরপুত্র আবুল ও ফজলুর বিরুদ্ধে কোনো রকম মুখ খুলিনি। এখন আর বসে থাকবো না। এবার হত্যা মামলা করে বিচার করেই ছাড়বো।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রহিমা খাতুন বলেছেন, তখন ১৯৭৬ সাল। ১ মাঘ। স্বামী আত্তাব ম-লের মাথায় ব্যথার চিকিৎসার জন্য ভাসুরের দু ছেলে আবুল ও ফজলু চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে নেয়ার কথা বলে সাথে করে নিয়ে যায়। ওরা বাড়ি ফিরলেও স্বামী আত্তাব আর ফেরেনি। সাথে করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার ২০ দিনের মাথায় ওরা বলে, তোমার স্বামী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ খবর পেয়ে স্বামীর লাশ দেখার জন্য হাসপাতালে ছুটি। লাশ দূরের কথা, হাসপাতাল ওই নামে কোনো রোগীই ২০ দিন ধরে ভর্তি ছিলো না বলে জানানো হয়। বাড়ি ফিরি। গ্রামের অনেকেই বলতে থাকে সম্পত্তির লোভেই ওরা ওদের চাচা অর্থাৎ আমার স্বামী আত্তাবকে হত্যা করে লাশ গুম করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে মিথ্যা খবর দেয়। তখন এসব শুনেও ভাসুরের দু ছেলের সন্দেহজনক আচরণ দেখেও মুখ খুলিনি মূলত ওই ৫ মেয়ের দিকে তাকিয়ে। এখন আগের মামলারও বিচার হচ্ছে শুনে মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। আবুল মারা গেলেও অপরজন বেঁচে রয়েছে।
আইনগত সহায়তা চেয়ে মানবতা ফাউন্ডেশনে আবেদন করেছেন রহিমা খাতুন। এ আবেদন গ্রহণের সময় মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. মানি খন্দকার বলেছেন সরেজমিন পরিদর্শনসহ আইন খতিয়ে দেখার পরই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেলে আইনগত সহায়তা প্রদানে মানবতা ফাউন্ডেশন সব সময়ই অগ্রণী ভূমিকা রাখে।