স্বামীসহ নিজের বাপ-মার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করলেন আলমডাঙ্গার কিশোরী সোহানা

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: স্বামীসহ নিজের বাপ-মার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করলেন আলমডাঙ্গার সোহানা। স্বামীর মারধর আর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে থানায় ছুটে এসেছেন বলে জানান তিনি।

জানা গেছে,  আলমডাঙ্গার বাদেমাজু গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে রুবেল একই গ্রামের প্রবাসী হাসিবুল হকের মেয়ে সোহানাকে বিয়ে করেন। সোহানা অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি যখন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তখন রুবেলের সাথে জোর করে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। সোহানার বয়স এখন চৌদ্দ বছর। বিয়ের পর থেকে রুবেল তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো অজুহাতে তাকে মারধর করতেন রুবেল। এ কারণে ছয় মাস আগে সোহানা রুবেলকে তালাক দেন। সোহানা আরও জানান, তালাক দেয়ার পর তার বাবা হাসিবুল দুবাই থেকে বাড়ি ফিরে তার আপত্তি সত্ত্বেও আবারও রুবেলের সাথে দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু রুবেলের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি কারণে-অকারণে সোহানাকে মারধর করতে থাকেন। রুবেল আইন-পুলিশকে ভয় পান না।

এদিকে, সোহানা তার মা সীমা খাতুনকেও আসামি করেছেন। এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলেই তিনি জানান, তার মা টাকার লোভে জোর করে রুবেলের সাথেই সংসার করার জন্য মারধর করতেন। আর জোর করে ছোটবেলায় বিয়ে দেয়ার জন্য বাবা হাসিবুলকে আসামি করেছেন সোহানা।

গতকাল দুপুরে স্বামী-বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ শেষে সোহানার যাওয়ার কোনো জায়গা ছিলো না। তিনি থানায় বসে বসে কাঁদছিলেন। এ সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা মানবাধিকার সংস্থার সভাপতি অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার থানায় ঢোকেন। তিনি সোহানার সাথে কথা বলেন। মানি খন্দকার বলেন, তার সংস্থা সোহানার পাশে দাঁড়াবে। বিশেষ করে আইনের দৃষ্টিতে শিশু বয়সে জোর করে সোহানাকে বিয়ে দিয়ে তার বাবা-মা অপরাধ করেছেন। আবার স্বামী রুবেল তার স্ত্রীকে দফায় দফায় নির্যাতন করে অপরাধ করেছেন। এই অপরাধের বিচার হওয়া দরকার। জেলা মানবাধিকার সংস্থা সোহানার পাশে দাঁড়াবে। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আকরাম হোসেন জানান, ১৪ বছরের একটি মেয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের কথা জানিয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। মেয়েটির লিখিত অভিযোগ নেয়া হয়েছে। রুবেলের নাবালিকা বধু নির্যাতন সইতে না পেরে থানায় এসে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। এমনকি তার বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছে।