স্ত্রীর গায়ে আগুন : স্বামীসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে লিমা আক্তার অন্তরা

 

স্টাফ রিপোর্টার: অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন লিমা আক্তার অন্তরা। তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ৬ দিনের মাথায় গতপরশু চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্তরার ভাই হাসান বাদী হয়ে অন্তরার স্বামী নাজমুল মল্লিক ও সোনালী বেগমকে আসামি করে বলা হয়েছে, নাজমুল মল্লিক তার মামি সোনালীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে দুজন মিলে হত্যার জন্যই অন্তরার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

লিমা আক্তার অন্তরা চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বলদিয়া মাদরাসাপাড়ার আলম আলীর মেয়ে। আনুমানিক ৬ বছর আগে তার সাথে বিয়ে হয় নেহালপুরের অদূরবর্তী বোয়ালিয়া বটতলার সানোয়ার মল্লিকের ছেলে নাজমুল মল্লিকের সাথে। সংসারে আড়াই বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। লিমা আক্তার অন্তরা গত ১৩ মার্চ সকালে স্বামীগৃহে অগ্নিদগ্ধ হয়। তার শরীরের নিম্নাংশের প্রায় ৬০ শতাংশ ঝলসে গেছে। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে লিমা আক্তার অন্তরা বলেছে, নাজমুল মল্লিকের সাথে সাথে যখন বিয়ে হয় তখন হিজলগাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস এইটে পড়তাম। হঠাত দেখতে এসে বিয়ে হলো। বিয়ের পর শুনলাম নাজমুল তার মামি সোনালীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছে বলেই তাড়িঘড়ি করে বিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব জেনেও নাজমুলকে সুপথে রাখার চেষ্টা করতে লাগলাম। সংসারে সন্তান এলো। বিয়ের পর মোটরসাইকেল দিতে হলো। পরে কিনে দিতে হয়েছে ইজিবাইক। ভালোভাবেই সংসার করে আসছিলো। গত কয়েক মাস ধরে সেই মামির সাথে আবারও সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি দানাবাধে। ঘটনার দিন সকালে রান্না ঘরে রান্না করছিলাম। মশলা নিতে ঘরে গেলে পেছন থেকে আগুন ধরিয়ে দেয় স্বামী। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে আগুন। স্বামী নাজমুল মল্লিক ঘরের দরজা দিয়ে সটকে পড়ে। কোনো রকম আগুন নেভায়। পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। প্রথমে সত্য বলতে শ্বশুরসহ তাদের লোকজন বারণ করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির পর পরই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরদিন তাকে ঢাকায় নেয়া হয়। এদিকে গতপরশু রোববার লিমা আক্তার অন্তরার ভাই হাসান বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টা মামরার দু আসামির একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, চেষ্টা চলছে।