সৈয়দ আশরাফকে থামান : প্রধানমন্ত্রীকে জাসদের অনুরোধ

 

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে থামাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতারা। তারা বলেছেন, এ ধরনের কাদা ছোড়াছুড়ি ১৪ দলীয় জোটের ঐক্য বিনষ্ট করবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে জাসদ নেতারা এসব কথা বলেন। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) ছাত্রলীগের এক সভায় জাসদ ও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধারক-বাহকরা ১০০ ভাগ ভণ্ড বলে মন্তব্য করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, জাসদ থেকে মন্ত্রী করায় আওয়ামী লীগকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল এসব কথা বললেন জাসদ নেতারা। দল গঠনের পর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) কয়েক দফা ভাঙনের কবলে পড়ে। সম্প্রতি নেতৃত্বের কোন্দলে জাসদ আবারো ভাঙে। এক অংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু সরকারের তথ্যমন্ত্রী। আরেক অংশের কয়েকজন সংসদ সদস্য রয়েছেন সংসদে। দুটি অংশই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে অংশ নেয় এবং একসাথে কর্মসূচি পালন করে।

সমাবেশে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যখন আমরা ঐক্যবদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজ যখন সম্পন্ন করছি, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে তথ্যমন্ত্রী যখন অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, তখন এই ধরনের কাদা ছোড়াছুড়ি আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করবে। মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে দুর্বল করবে। বরং আসুন জঙ্গি মোকাবেলা ও নাগরিকের নিরাপদ জীবনের জন্য গুপ্তহত্যা বন্ধ করতে ১৪ দলকে আরো শক্তিশালী করি।

জাসদের নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, আপনি থামান, আপনার এই মন্ত্রীকে থামান। এই সংকটে তিনি যে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন, যে অনৈক্যের সৃষ্টি করছেন, অবিলম্বে তার মুখ বন্ধ করুন। আর সৈয়দ আশরাফকে বলব, আপনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দিকে মনোযোগ দিন। আপনি কিভাবে মন্ত্রিত্ব চালান আমরা জানি, দেশবাসী জানে। আমরা তা বলতে পারি। কারণ, আমরা মহাজোটের অংশ। জনপ্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সেখানে মনোযোগ দিন।

শেখ হাসিনার উদ্দেশে আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিষ্কারভাবে আপনাদের বলে দিতে হবে, ঐক্য চান কি চান না। ১৪ দলের ঐক্য থাকবে কি থাকবে না? একদিকে আমাদের সভাপতি ও ১৪ দলের অন্যতম নেতার নামে বিষোদগার করবেন, আর অন্যদিকে জঙ্গি ঠেকাবেন, এটা হতে পারে না। আমরা মহাজোট সরকারে আছি, ১৪ দলে আছি। কিন্তু আমাদের নিজস্ব অবস্থান আছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আছে, সংবিধান আছে, জাতির জনক আছেন আমাদের সামনে। সেই বিবেচনা করেই চলি। আর ভুল করবেন না।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর জাসদের সমন্বয়ক মীর হোসাইন আখতার। সমাবেশ শেষে একটি মিছিলও বের করে জাসদ। মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পুরানা পল্টন হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গিয়ে শেষ হয়।