সেই লিজা অবশেষে ফিরেছে আপন ঠিকানায়

বাড়ি ফিরতে চায়নি বলেই চুয়াডাঙ্গায় সে প্রকৃত পরিচয় গোপন করে

 

কামরুজ্জামান বেল্টু/উজ্জ্বল মাসুদ: সেই লিজা ওরফে লিপা তার প্রকৃত ঠিকানা গোপন করলেও শেষ পর্যন্ত আপনজনদের আড়ালে থাকতে পারেনি। চুয়াডাঙ্গায় বহুল আলোচিত হওয়ার পর ফরিদপুরের টেপাখোলা নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আশ্রয় হলেও আদালতের আদেশ নিয়েই তার বড় ভাই আবুল কাশেম সেখান থেকে বাড়ি যশোর মনিরামপুরের ইত্তে গ্রামে ফিরিয়ে নিয়েছেন।

বাড়ি ফিরলেও লিজা ওরফে লিপা তার অপছন্দের সেই পাত্রের সাথে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। অবশ্য তার পরিবারের সদস্যরা সেই পাত্রের সাথে আর বিয়ে দেবে না বলে তাকে কথা দিয়েছে। লিপা লেখাপড়া করে আরো বড় হওয়ারই ইচ্ছে ব্যক্ত করেছে। তার নিকটজনদের বরাত দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল সামী এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, লিপা চুয়াডাঙ্গা অবস্থানকালে তার প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে। বাড়ি ফিরবে না বলে পণ করায় সে প্রকৃত ঠিকানা প্রকাশ করেনি।

গত ১০ জানুয়ারি ট্রেন থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে নামানো হয় ষোড়শী লিপাকে। তাকে স্টেশন মাস্টার আরামপাড়ার জমসেদের স্ত্রী পরিছনের সহযোগিতায় হাসপাতালে পাঠান। পরিছন লিপাকে প্রথমে আপন করে নিলেও পরে তার কথায় অসঙ্গতি পেয়ে মুখ ফিরিয়ে নেন। পুলিশ তার সাথে কথা বলতে গিয়ে গলদঘর্ম অবস্থায় পড়ে। সমাজসেবা অফিস তার পাশে দাঁড়ায়। আদালতের আদেশ নিয়ে ফরিদপুরের টেপাখোলা নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রেরণের উদ্যোগ নেয়। ১৬ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে সরে পড়ে লিপা। পরদিন তাকে পাওয়া যায় দর্শনায়। আজিমপুরের এক মহিলার বাড়িতে আশ্রয় হয়। সেখান থেকে ১৮ জানুয়ারি উদ্ধার করে পুলিশ। রাখা হয় চুয়াডাঙ্গা সরকারি শিশু পরিবারে। পরদিন আদালতের আদেশে সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসার পুলিশের সহযোগিতায় তাকে টেপাখোলায় নেয়া হয়। অপরদিকে লিপা নিরুদ্দেশে হওয়ার পর তার ভাই আবুল কাশেম যশোর মনিরামপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করে বোনকে খুঁজতে থাকেন। সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন তার বোনকে আদালতের মাধ্যমে ফরিদপুরের টেপাখোলায় রাখা হয়েছে। তিনি চুয়াডাঙ্গার আদালতের আদেশ নিয়েই টেপাখোলা নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে তার বোনকে সাথে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সে তার আপন ঠিকানায় ফেরে। সে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থানকালে খুলনার মনিরামপুর ও যশোর খেজুরার যে ঠিকানা দিয়েছিলো তা সঠিক ছিলো না। আর কোনো দিন বাড়ি ফিরবে না ভেবেই সে প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে ভুল ঠিকানা দেয়।