সাধুহাটির বোড়াই গ্রাম থেকে আবারও গরু চুরির ঘটনা?

 

বদরগঞ্জ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের ঝিনাইদহের বোড়াই কাচারিপাড়া থেকে গভীর রাতে আবারও দুটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। দিনের পর দিন সাধুহাটি ইউনিয়ন এলাকায় গরু, ছাগল চুরির সংঘাটির পাশাপাশি অপহরণ, ডাকাতির সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটেছে। সব মিলেই সাধুহাটি ইউনিয়ন এলাকা চোর, ডাকাত, অপহরণকারীদের রামরাজ্য কায়েমে পরিণত হয়েছে। চোর ডাকাতির ভয়ে রাতে এই ইউনিয়নবাসী উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে।

এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের বোড়াই কাচারিপাড়া অবস্থিত মহাসড়কের পাশে আতিয়ার হকের ছেলে মুকুল আলীর বাড়িতে চোর প্রবেশ করে। চোরের দল তার গোয়ালঘরের দুটি হালের বলদ গরু চুরি নিয়ে যায়। রাত ২টার দিকে বাড়ির গৃহকর্মী পাখি খাতুন গরুর খাবার দিতে গিয়ে দেখতে পান গোয়ালঘরে গরু দুটি নেই। সেই মুহূর্তেই গ্রামবাসী ও পুলিশ সহযোগিতায় এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক অভিযান চালিয়েও উদ্ধার করতে পারেনি চুরি হওয়া গরু দুটি। কৃষক মুকুল তার মা পাখি খাতুন গরু দুটির জন্য দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মুকুলের গরু চুরির পাশাপাশি বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর মাসজুড়ে ঝিনাইদহের সাধুহাটি ইউনিয়ন এলাকার গ্রামগুলো চুরির, বোমা বিস্ফোরণ ও অপহৃত ঘটনা ছিলো আলোচিত। গত ৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে ঝিনাইদহের মাটিকুমরা গ্রামের মফেজুর রহমানের শিশু ছেলে সাগর আলী চুয়াডাঙ্গা সদরের কুতুবপুর ইউনিয়নের আলিয়ারপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের একটি খাসি ছাগল চুরির করে বিক্রির করার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে। পরে সাগরের স্বীকারোক্তিতে ছাগল চোরের প্রধান হোতা ঝিনাইদহের বোড়াই গ্রামের মূত সাদেক আলির ছেলে কাশেম আলী ধরা পড়ে। একপযার্য়ে ওই ব্যবসাসায়ীর সাথে বোড়াই ত্রিমহনী নামক স্থানে কাশেম গ্রুপের পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বদরগঞ্জ বাজারের সিমেন্ট ব্যবসায়ী বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় কাশেম আলীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

গত ৮ ডিসেম্বর রাতে বোড়াই মাছপাড়ার ইয়াকুবার হকের ছেলে অহিদুল হকের একটি হালের বলদ গরু চোর দল চুরি করে নিয়ে যায়। গত ৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের বোড়াই মেটেলপুল নামক স্থানে বোড়াই গ্রামের লুৎফর আলীর ছেলে সেলিম তার হিরোহোন্ডা মোটরসাইকেল রেখে পাশে শিমক্ষেত দেখছিলেন। এ সময় চোরের দল সেলিমের মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে যায়। গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে সাধুহাটির আসাননগর গ্রামের হানেফ আলী বাড়িতে প্রবেশ করে তার গোয়ালঘর থেকে ১টি হালের বলদ গরু চুরি করে নেয়ার পর নয়মদ্দিন মিয়ার ছেলে তাকের আলীর বাড়িতে প্রবেশ করে একই কায়দায় ২টি গরুসহ ৩টি হালের গরু চুরি করে নিয়ে যায়। কয়েকদিন পর আসাননগর গ্রামে গরু চুরির সময় জনতার ধাওয়ার প্রতিরোধের মুখে চোরের দল আসাননগর মাঠের অদূরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা পালিয়ে যায়। গত ২০ ডিসেম্বর গভীর রাতে সাধুহাটির বোড়াই গ্রামের আলফাজ মণ্ডলের ছেলে হাসান আলীর গোয়াল ঘরে চোর প্রবেশ করে একটি হালের বলদ গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়া সরোজগঞ্জ বাজার বোয়ালিয়া গ্রামের পান ব্যবসায়ী বদরগঞ্জ বাজার থেকে ঝিনাইদহেরর হরিণাকুণ্ডু পাবর্তীপুর পানহাটে যাওয়ার সময় বোড়াই সাধুহাটি নামক স্থান থেকে অপহৃত হয়। তার কাছ থেকে মারধর করে প্রায় ৫৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মুহাম্মদপুর নামক স্থানে ফেলে রেখে অপহরণকারীরা চলে যায়। এ সব মিলিয়ে সাধুহাটি ইউনিয়ন এলাকায় চোর, ডাকাত নিয়ে এলাকার গ্রামবাসী চরম আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে।