শ্যালিকার সাথে পরকীয়া : গাংনীতে বউ-শাশুড়ীকে পিটিয়ে হাসপাতালে

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার মহিষাখোলা গ্রামে পলি খাতুন (২০) ও তার মা সালেহা খাতুনকে (৪৬) পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে জামাই মানিক হোসেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে বেধড়ক মারপিটের পর স্থানীয়রা মা মেয়েকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শ্যালিকার সাথে জামাইয়ের পরকীয়া ও শ্বশুরের সাথে আরেক নারীর পরকীয়ার জেরে পুর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে এই শারীরিক নির্যাতন বলে জানান আহতরা। মানিক হোসেন মহিষাখোলা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।

জানা গেছে, মেয়ের ওপর জামাইয়ের শারীরিক নির্যাতনের খবর পেয়ে দুই দিন আগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বড়বাড়ীয়া গ্রাম থেকে মহিষাখোলা গ্রামে আসেন মানিকের শাশুড়ী সালেহা। নির্যাতনের সত্যতাও মেলে। মেয়ের পাশাপাশি তার ওপরেও শুরু হয় নির্যাতন। শনিবার রাতে মানিক হোসেন নিজ বসতঘরে স্ত্রী পলি ও শাশুড়ী সালেহাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে উদ্ধার করে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সেলিম উদ্দীন জানান, পলির বুক, পিট, পেট ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠির আঘাতের চিহ্নি রয়েছে। এছাড়াও কয়েকদিন আগে স্বামী তাকে সিগারেটের ছ্যাকা দেয়। কয়েকটি স্থানে সিগারেটের আগুনের পোড়ার দাগ রয়েছে। এছাড়াও সালেহার শরীরে মারধরের দাগ রয়েছে।

আহত মা ও মেয়ে জানান, হত্যার উদ্দেশে তাদের মারধর করা হচ্ছিলো। দুজনেরই গলা টিপে ধরে গামছা দিয়ে ফাঁস দেয়ার চেষ্টা করে মানিক। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান আহতরা।

এদিকে নির্যাতনের পেছনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সালেহা খাতুন ও তার মেয়ে পলি খাতুন বলেন, সালেহা খাতুনের স্বামী মিরপুরের বড়বাড়ীয়া গ্রামের বিলকুছ হোসেন। সন্ত্রাসী মামলায় দীর্ঘ ১৪ বছর কারাবাসের পর তিন বছর আগে সে মুক্তিপায়। বিলকুছের ভাই এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী রবি ২০০৮ সালে ক্রসফায়ারে নিহত হয়। ছোট ভাই রবির স্ত্রী নার্গিস খাতুনের সাথে বিলকুছের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর শ্বশুর বাড়িতে যাতায়াতের সুযোগে রবির মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী চাচাতো শ্যালিকা বৃষ্টি আক্তারের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে মানিক হোসেনের। শ্বশুর রবির স্ত্রীকে আর জামাই রবির মেয়েকে বিয়ের চুড়ান্ত পরিকল্পনা নিয়ে সালেহা ও তার মেয়ে পলির ওপর শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

সালেহা খাতুন আরো জানান, শনিবার রাতে জামাই তাদেরকে মারধরের আগে শ্বশুরের সাথে মোবাইলফোনে আলাপ করে। শ্বশুরের নির্দেশেই তাকে ও তার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশে গলাটিপে মারধর করে। এদিকে স্ত্রী ও শাশুড়ীকে মারধর এবং জামাই-শ্বশুর মিলে মা মেয়ের সাথে পরকীয়ার রঙ্গলীলার ঘটনায় এলাকায় চলছে সমালোচনার ঝড়। অপরদিকে সালেহা ও পলি খাতুন অসহায় হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী মা মেয়ে।