রমজানে চুয়াডাঙ্গার বাজার ক্রেতার মুখে হাসি ফুটলেও হতাশ বিক্রেতা

 

স্টাফ রিপোর্টার: সাধারণত রমজান এলেই পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। তবে এবার চুয়াডাঙ্গায় এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে। রোজার আগে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম খানিকটা বেড়েছিলো। তবে শুক্রবার কাঁচাবাজারসহ রোজার মাসে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ছিলো স্থিতিশীল। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি পণ্য বাদে প্রায় সব জিনিসের দাম কমেছে।

বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ২০ টাকা, কচু ৪০ টাকা, পেঁপে ২৪ টাকা, ঢেড়শ ১০ টাকা, করলা ২০ টাকা, ঝিঙে ২০ টাকা, পটল ১০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ১৭ টাকা, গেমি ১০ টাকা, টমেটো ৩২ টাকা, শসা ১৬ টাকা, প্রতি আঁটি লালশাক ৫ টাকা, পুঁইশাক ১০ টাকা, সবুজশাক ৬ টাকা, কলমিশাক ৪ টাকা ও কাটোয়াশাক ১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদের মধ্যে অপরিবর্তিত রয়েছে আলু ও লাউয়ের দাম। এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচাঝাল ২০ টাকা, শুকনো ঝাল ২৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১৮ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, আদা ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব পণ্যের পূর্বের দামের থেকে বর্তমান দামের পার্থক্য রয়েছে ৫ থেকে ১৫ টাকা। মাংসের বাজারে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকায় ও ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকায় যা পূর্বের তুলনায় ১০ টাকা কমেছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া প্রতি খাঁচি ডিম বিক্রি হচ্ছে ২২৫ টাকায় যা পূর্বের তুলনায় ৩৫ টাকা কম।

কয়েকটি মসলা ও ডাল বাদে অন্য মসলা ও ডালের দাম খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। দাম বেড়েছে কলাই ও মসুর ডালের। রিফাইন্ড চিনি ৫৯ টাকা ও দেশি চিনি (আখ থেকে তৈরি) ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বেসরকারি রিফাইন্ড চিনির দাম কেজিতে ৭ টাকা বাড়লেও লবণের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এই রমজানে ইফতারির তালিকায় অন্যতম পণ্য ছোলার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ইফতারে অপরিহার্য এই পণ্যটি গত রোজায় বিক্রি হয়েছিলো ৫৬-৫৮ টাকা কেজি এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ টাকায় ।

গতকাল রোববার দুপুরে বাজারে ক্রেতাদের তেমন একটা ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। তবে অন্যবারের চেয়ে অপেক্ষাকৃত দাম কম হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজার করতে আসা চুয়াডাঙ্গা পলাশপাড়ার সাবেক সেনা সদস্য মুনসাদ আলী বলেন, গত রমজানের চেয়ে এবারে রমজানে বাজারে জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক কমেছে। এতে সাধারণ মানুষেরা তাদের সাধ আর সাধ্যের মিশেলে খুশিমনে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছেন।

তবে পণ্যের দাম কম হওয়ায় বিক্রেতাদের মুখে হতাশার ছাপ দেখা গেছে। কাঁচামাল বিক্রেতা মিলন আলী জানান, রমজান মাসে বেশি বেচা বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। যে দামে কাঁচামাল কিনেছি। সে দাম বা তার চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বিক্রি না হয়ে নষ্ট হওয়ায় অনেক সময় কাঁচামাল ফেলে দিতে হচ্ছে। এতে ব্যবসার চরম ক্ষতি হচ্ছে। কারণ হিসেবে বাজারে ক্রেতার আনাগোনা কম বলে জানালেন এই ব্যবসায়ী।

তাছাড়া জেলা বাজার মনিটরিং কমিটি দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সব সময় তৎপর রয়েছেন। এ বিষয়ে জেলা মার্কেটিং অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও বাজার মনিটরিং কমিটি সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তাছাড়া কাঁচামালের দাম পূর্বের থেকে কিছুটা কমেছে। এতে সাধারণ ক্রেতাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।