যে কোনো সময় বিদেশ যাচ্ছেন প্রধান বিচারপতি

স্টাফ রিপোর্টার: যেকোনো সময় দেশ ছাড়বেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। তার বিদেশ গমন সংক্রান্ত নথিতে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় এখন চিকিত্সার জন্য প্রধান বিচারপতি যেদিন দিনক্ষণ ঠিক করবেন সেদিনই বিদেশ যেতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে গতকাল এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এই চারটি দেশে যেতে চান। আজ শুক্রবার দেশ ত্যাগ করতে চান এবং ১০ নভেম্বর দেশে ফিরে আসবেন বলে তার চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির ছুটির বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে অতিরিক্ত কিছু বলা হয়নি, তিনি (প্রধান বিচারপতি) যা চেয়েছেন তাই প্রজ্ঞাপনে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এসব নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা করবেন না, এগুলো আন্দোলনের কোনো খোরাক  না এবং এ ব্যাপারে কোনো আন্দোলন হবে না।

এদিকে প্রধান বিচারপতির ছুটির মেয়াদ ২ নভেম্বর থেকে দশদিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্ধিত এই সময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। প্রধান বিচারপতি এক মাস ছুটিতে যাওয়ার পর বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞা। ছুটির বর্ধিতকালীন এই সময়ে তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আদেশক্রমে গতকাল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি বর্ধিত ছুটি কালীন বিদেশে অবস্থানকালে ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত অথবা পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞা প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। একটি সূত্র জানায়, আজ অথবা রোববার দুটি এয়ারলাইন্সে টিকেট বুকিং দেয়া রয়েছে। এখন টিকেট বুকিং অনুযায়ী তিনি সুবিধামত সময়ে দেশ ত্যাগ করবেন।

এদিকে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি দাবি করেছে, প্রধান বিচারপতিকে সুকৌশলে বিদেশে পাঠানোর ষড়যন্ত্র চলছে। তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হলেও দেশে আইনের শাসন না আসা পর্যন্ত আইনজীবীদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তবে এই আন্দোলনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতি চিঠি লিখে ছুটি নিয়েছেন তার অসুস্থতার কারণ বলে, এটিকে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। আমি মনে করি কোনো পয়েন্ট তো তারা আন্দোলন করার কিছু পায় না, তারা চেষ্টা করে খড়কুটো ধরে আন্দোলন যদি করা যায়?

প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর থেকে পহেলা নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। এই ছুটির মেয়াদ শেষ না হতেই গত ১০ অক্টোবর ছুটির মেয়াদ বর্ধিত করে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেন প্রধান বিচারপতি। ওইদিনই সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, বিচারপতি সিনহা দীর্ঘদিন বিচার কাজে থাকায় এবং অবসরগ্রহণের তারিখ নিকটবর্তী হওয়ায় মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্থ মর্মে অবগত করেছেন। মানসিক অবসাদ দূর করার জন্য প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গমন ও অবস্থান করতে চান।