যে কারণে ঝিনাইদহের ৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখন মামলার জালে বন্দি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার অন্তত ৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মামলার জালে জড়িয়ে পড়েছে। মামলার কারণে স্কুলের স্বাভাবিক কর্ম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রায় হাজিরা দিতে আসতে হয় কোর্টে। অন্যদিকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদেরও ঘুরতে হয় কোর্টের বারান্দায়। অনেক স্কুলের শিক্ষকরা পকেটের টাকা খরচ করে মামলা পরিচালনা করছেন এমন কথাও শোনা যায়। সূত্রমতে স্কুলের জমি নিয়ে বিরোধ, শিক্ষক ও পিয়ন কাম দফতরি নিয়োগ নিয়ে ৪২টি মামলা করা হয়েছে। স্কুলে জমি দানপত্র করে গেছেন পিতা। কিন্তু সন্তানরা বড় হয়ে জমি ফেরৎ চেয়ে একাধিক মামলা করেছেন। বঙ্কিরা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের জমি নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। হরিণাকু-ুর সুরুজপুর বেসরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা। তিনি স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা এবং শিক্ষক। গোপনে তাদের বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। ইতোমধ্যে স্কুলটি সরকারিকরণ করা হয়েছে। আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছেন। কামারকু-ু প্রাইমারি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে মামলা করেছেন এক শিক্ষক। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুশোবাড়িয়া প্রাইমারি স্কুলের পিয়ন কাম দফতরি নিয়োগ নিয়ে মামলা করা হয়েছে। শৈলকুপা পৌরসভা এলাকায় এক স্কুলে দু’প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলা চলছে। ঝিনাইদহ শহরের ইউকে ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালকের স্ত্রীসহ দুই নালীর সরকারি প্রাইমারিতে চাকরি হলেও আনসার ভিডিপি সার্টিফিকেট জাল এ অজুহাতে তাকে যোগদান করতে দেয়া হচ্ছে না। আদালত তার পক্ষে দুই বার রায় দিয়েছেন। কিন্তু দু’নারীকে যোগদান করতে দেয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ উঠেছে। তবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে বলা হয়েছে বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এ ভাবে সারা জেলায় ৪২টি মামলা চলমান রয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের জবাব দিতে দিতে হয়রান হচ্ছে শিক্ষা অফিসগুলো। সর্বশেষ রোববার স্কুল জাতীয়করণের দাবিতে কালীগঞ্জে বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের প্রধান সহকারী আইনাল হোসেন খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরকারিকরণের একটি নীতিমালা আছে। তারপরও বিভিন্ন স্থানে জাতীয়করণের দাবিতে মামলা হচ্ছে। গতকাল রোববার আদালত থেকে মামলার বেশ কয়েকটি কাগজ পেয়েছি। আমরা আদালতে জবাব দেব বলেও তিনি জানান। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ আকতারুজ্জামান জানান, তিনি নতুন এসেছেন। তাই খোঁজ না নিয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। ঝিনাইদহের সাবেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান জানান, সারা জেলায় প্রায় ৪২টি মামলা চলমান আছে। এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যথাযথভাবে আইন অনুসরণ করে যাচ্ছি।