যশোরে আসামি অপহরণের চেষ্টা ছাত্রলীগ নেতার

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরে আদালত চত্বরে যৌতুক মামলার আসামিকে মারপিট ও অপহরণের চেষ্টা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার পর আদালতের নির্দেশে জেলা ছাত্রলীগের উপসাংস্কৃতিক সম্পাদক ওমর ফারুক রয়েল ও মামলার বাদী জোবাইদা নার্গিসকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। মারপিটের শিকার হন যৌতুক মামলার আসামি শহরের বকচর এলাকার আমিরুল ইসলামের ছেলে এসএম শহিদুল ইসলাম ও শহিদুলের আট বছর বয়সী মেয়ে জেবা ফারিয়া।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০২ সালে এসএম শহিদুল ইসলামের সাথে শহরের ষষ্ঠীতলা এলাকার মোস্তফা ইকবালের মেয়ে জোবাইদা নার্গিসের বিয়ে হয়। কিন্তু দাম্পত্য কলহের জের ধরে ২০১১ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর ২০১১ সালে জোবাইদা নার্গিস বাদী হয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসএম শহিদুল ইসলামকে আসামি করে যৌতুক মামলা দায়ের করেন। গতকাল মঙ্গলবার এ মামলায় বাদীপক্ষের সর্বশেষ সাক্ষী উপস্থাপনের দিন নির্ধারিত ছিলো। এদিন মামলার আসামি শহিদুল ইসলাম তার আট বছর বয়সী মেয়ে জেবা ফারিয়াকে নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে আসেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর একটার দিকে শহিদুল ও তার মেয়ে আদালতের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মামলার বাদী জোবাইদা নার্গিস, জেলা ছাত্রলীগের উপসাংস্কৃতিক সম্পাদক ওমর ফারুক রয়েল, নাঈম ও অসীমসহ ৪/৫ শহিদুল ইসলামকে মারপিট শুরু করে।

এক পর্যায়ে তাকে অপহরণের চেষ্টা করে তারা। এ সময় চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জোবাইদা ও রয়েলকে আটক করলেও বাকিরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।

এ ঘটনার পর যৌতুক মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহিনা খানম আদালতে লিখিত অভিযোগ করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনা যাচাই করেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিরুল ইসলাম আসামি জোবাইদ নার্গিস ও ওমর ফারুক রয়েলকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সাথে এ ঘটনায় জড়িত পলাতক বাকি দু আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জামাল জানান, ছাত্রলীগ নেতা রয়েলসহ কয়েকজন আদালত চত্বর থেকে আসামি অপহরণের চেষ্টা করছিলেন। ঘটনাটি আদালত চত্বরে হওয়ায় বিচারকের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল জানান, রয়েলের বিরুদ্ধে ইতঃপূর্বে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।