মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন ‘স্লো-পয়জন’-এর মতো

মাথাভাঙ্গা অনলাইন:  ‘মোবাইল ফোন আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করলেও অতি সন্তর্পনে বয়ে নিয়ে আসছে অভিশাপ। এর ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন প্রযুক্তির অভিশাপের ডালায় একটি নতুন সংযোজন।

বর্তমানে এটি সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ করছে, যা চোখে দেখা যায় না। তবে এটি স্লো-পয়জন-এর  মতো কাজ করছে এবং মানুষের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে আসছে’ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত সেমিনারের বক্তারা।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘মোবাইল ফোন ও মোবাইল টাওয়ার: পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ অভিমত দেন।

আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য একটি হুমকি’ শীর্ষক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিডিডিআরবি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মুনিরুল আলম।

ড. মুনিরুল আলম তার প্রবন্ধে বলেন, ‘মোবাইল ফোন প্রযুক্তির কারণে আমরা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর রেডিয়েশনের সঙ্গে বসবাস করছি। এর ফলে মানুষের ক্যান্সার, বন্ধ্যাত্ব, মাথাব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, গর্ভপাতসহ মারাত্মক সব রোগে আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা বেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত রেডিয়েশন আমাদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে। আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলো ইতোমধ্যে মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘উন্নত বিশ্ব নতুন কোনো প্রযুক্তি আবিষ্কার করে যখন দেখে তা ক্ষতিকর, তখন তারা তা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে চালান করে দেয়।’

সেমিনারে মুনিরুল আলম মোবাইল ফোন ও তার টাওয়ারের রেডিয়েশন থেকে বাঁচতে কয়েক দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। তার মধ্যে রয়েছে, মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও এর টাওয়ার প্রতিস্থাপনে যথাযথ আইন করা;     মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমানো; শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে না দেওয়া; মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় হেডফোন ব্যবহার করা; বাসাবাড়ি ও ব্যস্ত এলাকা থেকে মোবাইল ফোনের টাওয়ার দূরে সরিয়ে এমন জায়গায় স্থাপন করা, যেখানে জনবসতি নেই।

বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী, বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।