মেহেরপুর পল্লি বিদ্যুত সমিতির ভোটকেন্দ্র দখলের অপচেষ্টা : পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির (পিবিএস) ৫নং এলাকা পরিচালক নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী আব্দুল্লাহ বাবুর সমর্থকদের ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুর সোয়া ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল্লাহ বাবু পরাজিত হচ্ছেন এমন ভেবে তার সমর্থকরা ভোটকেন্দ্র দখলের অপচেষ্টা করে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। মাত্র ৩৬ ভোটের ব্যবধানে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হামিদুল হককে পরাজিত করে এসএম আব্দুল্লাহ বাবু ৫নং এলাকা পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। বাবু পল্লী বিদ্যুত সমিতি বোর্ডের সভাপতি থাকায় ক্ষমতার অপব্যহার করে নিজ এলাকায় কেন্দ্র স্থাপন করে পেশি শক্তি দিয়ে ভোট নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। তবে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন বাবু। 

রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সদর উপজেলার আমদহ, পিরোজপুর ও মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়ন নিয়ে ওই এলাকা গঠিত। ভোটের তফশিল ঘোষণার আগ থেকেই পল্লী বিদ্যুত গ্রাহকরা রাইপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের দাবি, নির্বাচনী এলাকার একেবারের একপাশে ভোটকেন্দ্র হওয়ায় দুরের ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে চায় না। নুরপুর গ্রামে কেন্দ্র স্থাপন করলে মধ্যবর্তী স্থান হয়। এসএম আব্দুল্লাহ বাবুর নিজের এলাকায় কেন্দ্র হওয়ায় তিনি এর আগেও পেশি শক্তি দেখিয়ে পক্ষে ভোট নিয়েছেন বলে বিস্তর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেনি। এবারো পেশি শক্তির ব্যবহার করে আব্দুল্লাহ বাবু ভোট নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ভোটার। গতকাল ভোট শুরু থেকেই বাবুর সমর্থকরা হামিদুল হকের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেয়। কিন্তু পুলিশের আন্তরিকতায় তা বেশিদূর এগোয়নি। দুপুরের দিকে বাবু নিশ্চিত হয়ে যান তিনি পরাজিত হচ্ছেন। ওই সময়ে হামিদুল হকের শতাধিক ভোটার ভোট প্রদানের জন্য অপেক্ষা করলেও বাবুর কোনো ভোটার ছিলেন না। এমন সময় বাবুর নির্দেশে সমর্থকরা ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরে জেলা শহর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে বাবুর দু সমর্থককে আটক করে পুলিশ। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই সরজিত জানিয়েছেন, বাবু ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে এ গণ্ডগোল করেছে। সকাল থেকেই কয়েক দফা লাঠি চার্জ করতে হয়েছে।

এদিকে গণ্ডগোলের পর কোনো ভোটার ভোট প্রদান করেননি। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ৬ হাজার ৯১ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রয়োগ করেছেন মাত্র এক হাজার ২৫৬ জন। বাতিল হয়েছে মাত্র দুটি ভোট। এসএম আব্দুল্লাহ বাবু বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৪৫ ভোট এবং একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হামিদুল হক মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৬০৯ ভোট। তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল মেনে নিলেও পেশি শক্তি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিকল্পিতভাবে তাকে পরাজিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হামিদুল হক। মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আলী হোসেন ও প্রিসাইডিং অফিসার এজিএম এমএস রেজাউল করিম নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করলেও আব্দুল্লাহ বাবু ও তার সমর্থকদের এ কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের আশ্বাসও দিয়েছেন তারা।