মেহেরপুরে চাষির গাজরের লাভ মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেলায় গাজর চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে প্রথমদিকে ভালো দাম পেলেও বর্তমান সময়ে বাজার দাম না পেয়ে কৃষকরা হতাশ। তবে কৃষি অফিসার বললেন- ভালো দাম পেতে গেলে জেলায় গাজরের চাষ বৃদ্ধি করে মেহেরপুর থেকে অন্য জেলায় রফতানি করতে হবে। তবেই গাজর চাষীরা লাভবান হবেন। অন্যথায় চাষির উৎপাদিত গাজরের লাভ পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের পকেটে যাবে। ৫ বছর আগেও মেহেরপুর জেলায় গাজর উৎপাদন চোখে পড়ত না। সম্প্রতি মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের যাদবপুর, গোভীপুর, রাজাপুর, রাধাকান্তপুর ও কামদেবপুরসহ আশেপাশের বেশকিছু গ্রামের মাঠে গাজর চাষ হচ্ছে। এতে পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোর থেকে গাজর আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে মেহেরপুরের উৎপাদিত গাজর জেলার চাহিদা পূরণ করলেও বাইরের জেলায় রফতানি করার মতো পর্যাপ্ত উৎপন্ন হচ্ছে না।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের গোভীপুর গ্রামের চাষি নূর ইসলাম জানালেন, উঁঁচু ও বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে ভালো গাজর উৎপন্ন হয়। এ বছর গোভীপুর, যাদবপুর, রাজাপুর, কামদেবপুর ও উজুলপুরসহ আশেপাশের মাঠে পর্যাপ্ত গাজর চাষ হয়েছে। তিনি নিজে চাষ করেছেন ১৫ কাঠা, যাদবপুর গ্রামের চাষি আলিম ২৫ কাঠা, একই গ্রামের দবির দেড় বিঘা ও সাদ আলী এক বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছেন।
মাঠের চাষিরা জানালেন, এ বছর আশেপাশের মাঠে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে গাজর চাষ হয়েছে। কার্তিক মাসে গাজর চাষ করতে হয়। মাত্র ৩ মাসের ফসল গাজর। ফলনও ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় একশ’ মন গাজর উঠবে। তারা আরও জানালেন, সার-বিষ, বীজ ও চাষ বাবদ বিঘা প্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। এ বছর যারা আগাম গাজর চাষ করেছিলেন তারা প্রতিমণ গাজরের দাম ১২শ টাকা থেকে ১৬শ টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে মেহেরপুর বাজারে গাজরের পাইকারি মূল্য প্রতিমণ মাত্র ২শ’ টাকা। চাষিরা জানালেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেট করে গাজর ক্রয় করায় চাষিরা দাম পাচ্ছেন না। মেহেরপুরের বাজারে বর্তমানে গাজর খুচরা ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, কাঁচামাল পড়ে থাকলে লাভের পরিবর্তে ক্ষতি হয়। তাই সবজি বেশি লাভে বিক্রি করা হয়। তারপরেও বাজারে গাজর ভাল-মন্দ অনুযায়ী দামে কেনা-বেচা হচ্ছে। মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম কামরুজ্জামান জানান, বর্তমান সময়ে মেহেরপুরের গাজর জেলার চাহিদা মিটাচ্ছে। তবে জেলার বাইরে রফতানি করার মতো ব্যাপকহারে চাষ হচ্ছে না। সেই সুযোগে স্থানীয় আড়ৎ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করলে কৃষক দাম পাবে না।