মারা যাওয়ার ২০ দিন পর জমি রেজিস্ট্রি করে দিলেন এক বাবা

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার মটমুড়া গ্রামের শামসুদ্দীন মারা গেছেন গত ৮ জানুয়ারি। অথচ ২৮ জানুয়ারি তার সব সম্পত্তি চার ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। তাও আবার স্বশরীরে এসেছিলেন জমি রেজিস্ট্রি করতে। গাংনী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ওই দলিলর রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়া শুরু হয়েছে। পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকার থেকে বোনদের ঠকাতে অন্য এক ব্যক্তিকে বাবা সাজিয়ে তার ছেলেরা এই জঘন্য কাজটি করেছেন বলে অভিযোগ বোনদের।
জানা গেছে, মটমুড়া গ্রামের শামসুদ্দীন গত ৮ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তার ৫ ছেলে ও তার চার মেয়ে রয়েছেন। ৫ ছেলে তাদের বোনদের ঠকাতে পরিকল্পনা করে। সেমত গত ২৫ জানুয়ারি গাংনী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এসে আব্দুল খালেক নামের এক দলিল লেখকের (মহুরা) দারস্ত হন। আব্দুল খালেকের জোগসাজজে তারা মৃত বাবার জমি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করার চক্রান্ত করেন। দলিল লেখকের পরামর্শে বড় ভাই আশরাফুল ইসলামের শ্বশুর খলিশাকুণ্ডি গ্রামের মফেজ উদ্দীনকে বাবা সাজিয়ে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে আসেন। বোনদের বঞ্চিত করে ৫ ভাইয়ের নামে পিতার নামীয় ১৮ বিঘা সম্পত্তির রেজিস্ট্রি দলীল করেন। আব্দুল খালেক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সাব রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে দলিল সম্পন্ন করেছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বোন ও তাদের পরিবার।
বোনদের অভিযোগ, পিতার নামীয় ১৮ বিঘা সম্পত্তি থেকে তাদের ফাঁকি দিতেই ভাই এনামুল, মনিরুল, একরামুল, নাজমুল ও আশরাফুল বড় ভায়ের শ্বশুর খলিসাকুণ্ডির মফেজ উদ্দীনকে বাবা সাজিয়ে রেজিস্ট্রি করে নেয়। যার দলিল নং- ৬৭৭। দলিল লেখনিতে পিতার জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করা হলেও ভায়ের শ্বশুরের ছবি দেয়া হয়েছে। দলিল লেখক আব্দুল খালেকের যোগ সাজশে সম্পত্তি রেজিস্ট্রিতে সনাক্তকারী ছিলেন, ইকুড়িয়া গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে নূরুজ্জামান ও স্বাক্ষী হিসেবে ছিলেন দেবীপুর গ্রামের ছিদ্দিক আলীর ছেলে জালালুদ্দিন । বিষয়টি অবগত হবার পর সাব-রেজিস্টার বরাবর তারা দলিল বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সাব রেজিস্ট্রার আব্দুর রব জানান, ছবি ও স্বাক্ষি দেখে দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। ভূয়া বিক্রেতা কিংবা স্বাক্ষী সনাক্তকারী হলে তার দ্বায়ভার বহন করবেন ওই দলিল লেখক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দলিল বাতিলসহ দলিল লেখকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত দলিল লেখক আব্দুল খালেক নানাভাবে এই প্রতিবেদককে বোঝানোর চেষ্টা করেন।