মামলা করে মহাসঙ্কটে আলমডাঙ্গা এরশাদপুরের দুটি পরিবার : সংবাদ সম্মেলন

 

ঘরবাড়ি পুড়িয়েও থামেনি আসামিরা : দিচ্ছে খুনের হুমকি!

স্টাফ রিপোর্টার: মামলা করে মহাসঙ্কটে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা এরশাপুরের দুটি দরিদ্র পরিবার। অপহরণের পর কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উত্থাপনের পর বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়েই শুধু দেয়া হয়নি, অব্যাহত খুনের হুমকিতে বিচারপ্রার্থী পরিবারটি বাড়ি ফিরতে পারছে না। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বর্ণনা দিয়ে বাড়িছাড়া পরিবারটি শেষ পর্যন্ত স্টেশনে আশ্রয় নেয়।

অবশ্য মানবতা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সংবাদ সম্মেলন শেষে এরা জানিয়েছেন, আজ শনিবার চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের নিকট ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে প্রতিকার প্রার্থনা করবে। নির্যাতনের শিকার পরিবারটির গৃহকর্তা ভ্যানচালক। তার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন চুয়াডাঙ্গার মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. মানি খন্দকার। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভ্যানচালকের এক মেয়ে আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ভ্যানচালকের স্ত্রীর ভাই তথা শ্যালক এরশাদপুরে পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করে। শ্যালকের ১৪ বছর বয়সী কন্যা ভ্যানচালকের মেয়ের সাথেই রাতে থাকতো। আনুমানিক ১০ মাস আগে একই গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে সুজন ভ্যানচালকের শ্যালকের মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বিয়ে করে। এ ঘটনার ৫ মাসের মাথায় শ্যালকের মেয়ে সুজনকে তালাক দিয়ে ফের লেখাপড়া শুরু করার প্রস্তুতি নিতে থাকে। এরই মাঝে গত ২৪ মে রাত ১২টার দিকে একই গ্রামের আতিয়ারের ছেলে রানা, মহিরের ছেলে আরিফ, আজিজুলের ছেলে মনিরুল, দুলালের ছেলে সাইফুল, শুকুর আলীর ছেরে সুজন ভ্যানচালকের মেয়েসহ শ্যালকের মেয়েকে অপহরণ করে। ভ্যানচালকের ছেলেকে বেঁধে রাখে। গ্রামের কবরস্থানের নিকট থেকে ভ্যানচালকের মেয়েকে উদ্ধার করা হলেও শ্যালকের মেয়েকে ওইদিন আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান হাসান কাদির গণুসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়। পরদিন হাসান কাদির গণুর বাড়িতে ভ্যানচালকের শ্যালকের কন্যাকে রেখে যায়। এ বিষয়ে মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয় ঠিকই, কিন্তু ধর্ষণের অভিযোগ এজাহারভুক্ত করেনি।

মামলা দায়ের করার পর শুরু হয় হুমকিধামকি। পরদিন সকালে আসামিরা ভ্যানচালক ও তার শ্যালকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাড়িঘর ছেড়ে পরিবার দুটি আশ্রয় নেয় ভ্যানচালকের জামাইয়ের বাড়ি ঈশ্বরদী। ঈশ্বরদীতে শ্যালকের কন্যার ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়। পুলিশ যেমন ধর্ষণ মামলা নিচ্ছে না, তেমনই একের পর এক হুমকির মুখে বাড়ি ফিরতে পারছে না এ পরিবারটি। সংবাদ সম্মেলনে ভ্যানচালক ও তার স্ত্রীসহ তার নিকটজনদের পাশাপাশি মানবতা ফাউন্ডেশনের অ্যাড. জিল্লুর রহমান জালাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।