ভারতে চামড়া পাচারের আশংকা

 

মাথাভাঙ্গা অনলাইন: সীমান্ত দিয়ে এবারো কোরবানির চামড়া ভারতে পাচারের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে চামড়া পাচারে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের তৎপরতায় শঙ্কিত তারা। কোরবানির চামড়া পাচার রোধে সীমান্ত এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়াানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।

পাচার রোধে এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজিবির সদর দপ্তর থেকে। তৎপরতা বাড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসনও।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সীমান্ত এলাকাগুলোতে এরইমধ্যে চামড়া পাচারে সিন্ডিকেট গড়ে উঠতে শুরু করেছে। আর মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও তৎপরতা শুরু করেছে। তাদের কারণে যারা প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ী তারা চামড়া কিনতে পারবেন না।

ব্যবসায়ীরা জানান, বছরজুড়েই তারা চামড়া কেনাবেচায় বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন। কোরবানির ঈদে কমপক্ষে ২০ থেকে ২২ কোটি টাকার চামড়া কেনাবেচা হয়। ওই টাকা ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে ঈদের আগে পাওয়া যায় না। ফলে ঈদে নতুন করে চামড়া কিনতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা জোগাড় করতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।

গত কোরবানির ঈদে সিলেট বিভাগে প্রায় দেড় লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের হাতে এসেছে ৮০ হাজার পিস চামড়া। বাকি চামড়া সীমান্ত হয়ে ভারতে পাচার হয়ে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের মতে, সিলেট বিভাগে দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা থাকায় সহজেই পাচার হয়ে যায় চামড়া।

রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা জানান, বহিরাগত ব্যবসায়ীরা স্থানীয় কিছু এজেন্টের মাধ্যমে চামড়া সংগ্রহ করে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করে থাকে। দেশি বাজারের চেয়ে ভারতে দাম ভালো পাওয়া যায়। তাই অধিক মুনাফার আশায় দেশের বিভিন্ন জেলার মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এসে চামড়া কিনে নেন। ঈদের দিনে তাদের দৌরাত্ম্যে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন।

এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাজশাহী-৩৭ ব্যাটালিয়নের সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল নজরুল ইসলাম জানান, কোরবানির ঈদের পর সীমান্তপথ দিয়ে কেনোভাবেই চামড়া যেন পাচার না হতে পারে সেজন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থানে আছে। প্রতিটি বিওপিতে এরই মধ্যে সংবাদ পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাটে কোরবানির ঈদের সময়ে বেচাকেনা হয় চার থেকে পাঁচ শো কোটি টাকার চামড়া। এই সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে পাচারকারী চক্র। পাচার বন্ধে সীমান্তের আট কিলোমিটারের মধ্যে চামড়াা মজুদ ও সংরক্ষণ না করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।