বাড়িতে ডেকে প্রেমিকাকে ধর্ষণ : প্রেমিক মাহবুব গ্রেফতার

দামুড়হুদার কলাবাড়ি গ্রামে মানবাধিকারকর্মদের হস্তক্ষেপে ৪ দিন পর উদ্ধার

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার কলাবাড়ি গ্রামে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ করেছে একই গ্রামের প্রেমিক মাহবুব। তাকে আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ধর্ষিতার পিতা স্থানীয় লোক মারফত ছেলেপক্ষের সাথে দেনদরবার করে মেয়েকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলে ছুটে যান পুলিশের কাছে। পুলিশের সহায়তা না পেয়ে অবশেষে মানবাধিকার সংগঠনের শরণাপন্ন হলে মানবাধিকারকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেন। নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রী বাদী হয়ে প্রেমিক মাহবুবসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে গতকাল বৃহস্পতিবার দামুড়হুদা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে। গতকালই ধর্ষক মাহবুবকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানাহাজতে রেখেছে। আজ শুক্রবার তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে।

মামলার এজাহারসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের কলাবাড়ি গ্রামের ক্যাম্পপাড়ার কুড়ন মণ্ডলের ছেলে দামুড়হুদা আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র মাহবুব (২১) একই গ্রামের এক স্কুলছাত্রীর সাথে প্রায় দু বছর আগে ফুঁসলিয়ে প্রেমসম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে মাহবুব স্কুলছাত্রীর সাথে গড়ে তোলে দৈহিক সম্পর্ক। প্রেমিক মাহবুব বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিকাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার দৈহিক মেলামেশা করে। প্রেমিকা তার প্রেমিক মাহবুবকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। গত ৪ জানুয়ারি মাহবুরের বাড়িতে লোকজন না থাকায় সে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রেমিকা স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মাহবুবের বাড়ির লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে তড়িঘড়ি বাড়ি এসে স্কুলছাত্রীকে ঘরে আটকে রাখে। মেয়ের পিতা মেয়েকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় লোকজনের শরণাপন্ন হন। মেয়ে উদ্ধারে ব্যর্থ হলে তিনি বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানান। কিন্তু পুলিশ মেয়ে উদ্ধারে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। ফলে তিনি ছুটে যান মানবাধিকারকর্মীদের কাছে। আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) নামের মানবাধিকার সংগঠনের উপজেলা শাখা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করলে মানবাধিকার সংগঠনের দামুড়হুদা উপজেলা শাখার সভাপতি বিষয়টি জেলা শাখার সভাপতিকে অবগত করেন। জেলা শাখার সভাপতি ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে উপজেলা সভাপতি মজিবার রহমান, জেলা সদস্য ডালিম ও উপজেলা শাখার সদস্য অরুন গত বুধবার সকালে ছুটে যান প্রেমিক মাহবুবের বাড়িতে। নানা টালবাহানা শেষে লিখিত মুচলেখা দিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেন মানবাধিকার সংগঠনের লোকজন। আইনি সহায়তা পেতে তারা ছুটে যান পুলিশ সুপারের নিকট। গতকাল বৃহস্পতিবার স্কুলছাত্রী বাদী হয়ে প্রতারক প্রেমিক মাহবুবের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। থানা পুলিশ প্রতারক ধর্ষণ প্রেমিককে মাহবুবকে গ্রেফতার করে।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, বিষয়টি জানার পর আমি চেষ্টা করেছি বিয়ের মাধ্যমে সমাধান করতে। কিন্তু ছেলেপক্ষ রাজি না হওয়ায় শেষমেশ আইনি পথেই হাঁটতে হলো। ছেলের স্বভাব চরিত্র ভালো নয়। এর আগেও বেশ কয়েকটি মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জেনেছি। আগামীকাল (আজ) শুক্রবার তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।