বাংলাদেশ-ভারত বন্দি বিনিময় চুক্তির দলিল হস্তান্তর

মাথাভাঙ্গা অনলাইন :  বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত বহিঃসমর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরের দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দু’দেশের বন্দিবিনিময় চুক্তি কার্যকর হলো।

বুধবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব সিকিউকে মুশতাক আহমদ ও ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ দলিলটি বিনিময় করেন।

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, চুক্তি অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজার মেয়াদ ন্যূনতম একবছর হলে এক দেশ থেকে অন্যদেশের কাছে বহিঃসমর্পণ করা যাবে।

এ চুক্তির ফলে উপমহাদেশের অপরাধীরা আর কোনো দেশে আশ্রয় পাবে না। সন্ত্রাস নির্মূলেও এ চুক্তি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।

এই বহিঃসমর্পণ চুক্তির অনুসমর্থন দলিলে স্বাক্ষরের ফলে আজ থেকে এই চুক্তিটি কার্যকর হলো। এর ফলে আসামের বিদ্রোহী সংগঠন উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ফিরিয়ে নিতে পারবে ভারত। বাংলাদেশও সুব্রত বাইন ও সাজ্জাদ হোসেনের মতো পলাতক সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। তবে কোনো দেশ বন্দি বিনিময়ের আবেদন করলে কত দিনের মধ্যে তা সুরাহা করতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো সময়ের উল্লেখ নেই চুক্তিতে।

চুক্তির বিধান অনুযায়ী আইনানুগ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে এক দেশ অপর দেশের কাছে দণ্ডপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন ব্যক্তিকে অভিযুক্ত অপরাধের সাজার মেয়াদ ন্যূনতম এক বছর পূর্ণ হলে তুলে দিতে পারবে। তবে রাজনৈতিক চরিত্রের অপরাধের ক্ষেত্রে বহিঃসমর্পণের অনুরোধ দুই দেশেরই প্রত্যাখ্যানের সুজোগ থাকবে। এ ছাড়া যে কেউ ছয় মাসের নোটিশে এ চুক্তি বাতিল করতে পারবে। চুক্তি অনুযায়ী কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত বা অভিযুক্তকে সল্প সময়ের জন্য বা সাময়িকভাবে বহিঃসমর্পণ করা যাবে। একই ব্যক্তির বিষয়ে একাধিক দেশ হতে বহিঃসমর্পণের অনুরোধ থাকলে সে ক্ষেত্রে অনুরোধপ্রাপ্ত দেশ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। রাষ্ট্র নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্তের স্বার্থে বহিঃসমর্পণের যেকোনো প্রস্তাব প্রত্যাক্ষাণের সুযোগ দুই দেশেরই থাকবে।

এর আগে দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় এই বহিঃসমর্পণ চুক্তিতে সই করেন। এরপর গত ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই চুক্তিতে অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। তার আগেই ভারত এ চুক্তিতে অনুসমর্থন দেয়।