ফেনসিডিল পাচার ও উদ্ধার নিয়ে আন্দুলবাড়িয়ায় পুলিশের তদন্ত : প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি গ্রহণ

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: আন্দুলবাড়িয়া থেকে ফেনসিডিল পাচার ও ফেনসিডিল উদ্ধার করে পুলিশে দেয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে গতকাল আন্দুলবাড়িয়ায় পুলিশ এলাকাবাসীর জবানবন্দি নেয়। এতে পক্ষে-বিপক্ষে নানা কাহিনি উঠে আসে। বেরিয়ে আসে মান্নানের নাম।

জানা গেছে, গত ২৮ মে মান্নান কুষ্টিয়া ভাণ্ডার লেখা ধনেপাতার ঝুড়িতে অভিনব কায়দায় ১শ বোতল ফেনসিডিল ঢাকায় পাচার করাকালে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। ঘটনার দু দিন পর জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমাযুন কবীর সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গণতদন্ত করেন। গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই লুৎফুল কবীর, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আকরাম হোসেন, শাহাপুর ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই ওয়ালিয়ার রহমান, এএসআই তকিবুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আন্দুলবাড়িয়া পোকামারীপাড়া মোড়ে গণশুনানি করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী করিমনচালক, ক্ষেতমালিক ও দুটি বিবাদমান পক্ষ দুলাল ও মহিদুল ইসলামের বিষয়ে তথ্য নেন। এ সময় নানা তথ্য উঠে আসে। অভিযোগ করতে গিয়ে এক পক্ষ ফেনসিডিল মামলায় জড়ানোর আশঙ্কায় নিজেদের মধ্যে মোবাইলফোনের রেকডকৃত কথোপকথনও তুলে ধরেন। বলেন, দুলালের বাড়ি থেকে ৬ বোতল উদ্ধারের আড়ালেও রয়েছে চক্রান্ত। ফেনসিডিল মামলার আসামি আব্দুল গনিসহ উপস্থিত জনতার সাক্ষ্য ও জবানবন্দিও নেয়া হয়।

এ সময় আন্দুলবাড়িয়া আব্দুল ওয়াহেদ ট্রান্সপোটের লোড পয়েন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত শেখ লিটন জানান, ঘটনার দিন আন্দুলবাড়িয়া পোকামারীপাড়ার মোতালেব আলীর ছেলে করিমনচালক হাফিজুর মান্নান-কুষ্টিয়া ভাণ্ডার লেখা ধনেরপাতা ঝুড়ি নিয়ে এসেছিলো। সন্দেহ দেখা দেয়ায় ঝুড়ি খুলে পাতার মধ্যে থেকে ১শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। এ সময় করিমনচালক অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা কলে জনতা পিছু নিয়ে তাকে ধরে বেধে রাখে। বাজার কমিটির সভাপতির সুপারিশে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, মাঠে মুগ তুলে বস্তার ওপর শুয়ে থাকাকালে করিমনচালক হাফিজুর ও মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে মহিদুল মাঠ থেকে ধনেপাতা নিয়ে বাজার উদ্দেশে নিয়ে যায়। ক্ষেতমালিক পোকামারীপাড়ার মোফাজ্জেল হোসেন জানান, উথলীর মান্নানের নিকট তিনি ধনেপাতা বিক্রি করেন। তবে ক্ষেত থেকে ধনেপাতা তুলে নেয়ার সময় তিনি ছিলেন না।

করিমনচালকের সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, পুলিশ করিমনটি আটক করার পর পোকামারীপাড়ার রুহুল আমিনের ছেলে আব্দুল গনি আটক করিমন ছাড়াতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। করিমনচালক হাফিজুর জিজ্ঞাসাবাদে জানান, আব্দুল গনির চুক্তিতে ধনেপাতার ভাড়ায় যায়। এ সময় আব্দুল গনি পুলিশ কর্মকর্তা ও উপস্থিত জনতার সামনে শপথ করে বলেন, মাল আমার না, ধনেপাতা ক্ষেত আমি কেনাকাটা করিনি। পাতা মারতে ক্ষেতে আমি যাইনি, করিমন আমি ভাড়া করেনি। সব কিছু ষড়যন্ত্র বলে দাবি করে তিনি বলেন, কারা ৩০ হাজার টাকার বিনিময় করিমন ছাড়িয়েছে তারা কারা: তদন্তকারী কর্মকর্তাদের এদিকেও নজর দেয়া দরকার। উপস্থিত জনতার নিকট থেকে পাওয়ার পর মান্নানকে খুঁজতে শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তকালে আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার, বাজার কমিটির সভাপতি মির্জ্জা হাকিবুর রহমান লিটন, সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিদুল ইসলাম মধু, ইউপি সদস্য সাদ আহম্মদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।