ফারুকীর খুনিদের গ্রেফতারে আলটিমেটাম

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: টেলিভিশনেধর্মীয় অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় উপস্থাপক শাইখ নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যায়একদিকে শোক, আরেকদিকে বিক্ষোভ-ভাঙচুরে উত্তাল দেশ। ইসলামী ফ্রন্ট ও তাদেরসহযোগী দলগুলো চট্টগ্রাম, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানেবিক্ষোভের পাশাপাশি ভাংচুর করেছে বহু যানবাহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওদোকানপাট। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে এ সংগঠনগুলো।শনিবারের মধ্যে তাদের গ্রেফতার না করা হলে আগামী রোববার সারা দেশে হরতালের ডাকওদেয়া হয়েছে।

গত বুধবার রাতে ১৭৪ রাজধানীর রাজাবাজারের (নতুন ৪৮) বাসায়পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করাহয় মাওলানা ফারুকীকে। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার তার লাশ পরিবারের কাছেহস্তান্তর করা হয়েছে। তার মৃত্যুতে গভীর নিন্দা, প্রতিবাদ ও শোক জানিয়েছেনবিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, হেফাজতেইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল ওসংগঠন। দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সবাই।

ফারুকীহত্যার ঘটনায় তার মেজ ছেলে ফয়সাল ফারুকী বাদী হয়ে শেরেবাংলানগর থানায়অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ডাকাতি মামলা দায়ের করেছেন।বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলাটির তদন্তডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে শেরেবাংলানগর থানার এককর্মকর্তা জানিয়েছেন।

মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী চ্যানেল আই ওমাইটিভিতে কাফেলা এবং শান্তির পথে নামে দুটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন।হাইকোর্ট মাজার জামে মসজিদের খতিব, সুন্নি সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতেরআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য, ফারুকী ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস নামে একটি হজ ও ওমরাহ এজেন্সির ব্যবস্থাপনাপরিচালক, ইসলামিক মিডিয়া জনকল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যানসহ বেশকিছু সামাজিক ওরাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি।

জানাজা ও দাফন: প্রথমে তারলাশ রাজধানীর রাজাবাজারের নাজনীন হাইস্কুল মাঠে নেয়া হয়। সেখান থেকেচ্যানেল আই কার্যালয়ে প্রথম জানাজা ও পূর্ব রাজাবাজার মসজিদে মাগরিবেরনামাজের পর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার লাশ নেয়া হয় বারডেমহাসপাতালের হিমাগারে। আজ চট্টগ্রামের বাইতুল ফালাহ মসজিদে তৃতীয় ও জুমারনামাজের পর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলারবোদা উপজেলার বড়শ্বশী ইউনিয়নের নাউতারী গ্রামে নিয়ে দাফন করার কথা রয়েছে।তবে তার বড় ছেলে মাসুদ নূরী ও ভাই আবদুর রউফ সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার পরলাশ দাফনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ইসলামী ফ্রন্ট ও তাদেরসহযোগী দলগুলো ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ওসমাবেশ করেছে।

যেভাবে হত্যাকাণ্ড: হত্যাকাণ্ডের সময় বাসায় ছিলেনফারুকীর ছেলে মারুফ, শাশুড়ি জয়গুন বিবি, স্ত্রী লুবনা। এছাড়া আরও দু মহিলাভক্ত তার কাছে গিয়েছিলো মাগরিবের নামাজের আগে। হত্যাকাণ্ডের সময় তারাওসেখানে উপস্থিত ছিলেন।মারুফ জানান, ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৬-৭ যুবক দুদফায় বাসায় প্রবেশ করে। সবার পরনে ছিলো প্যান্ট-শার্ট। একজনের মুখে হালকাদাড়ি ছিলো। তাদের মধ্যে দুজন দু দিন আগেও তাদের বাসায় গিয়েছিলো। যাদের দেখলেচিনতে পারবো। তারা আব্বুর সাথে কথা বলছিলো। আব্বু একটি চেয়ার এনে দিতে বলেন।চেয়ার নিয়ে ভেতরে যাওয়ার আগেই এক যুবক তার (ফারুকী) বুকে অস্ত্র ধরে।চেয়ার নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে লাথি মেরে নিচে ফেলে দেয়। অন্য যুবকরা বাসারভেতরে গিয়ে বলে খবরদার কেউ চিল্লাবি না।