প্রার্থী বাছাই সভায় সুবিধাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে তৃণমুল নেতাদের ক্ষোভ

 

মাথাভাঙ্গা অনলাইনঃ

আগামি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম দিনের বৈঠকে মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেছেন তৃণমুল নেতারা। তাদের অভিযোগ মন্ত্রী-এমমিরা দলীয় মনোনয়ন নিয়ে এমপি হয়ে দলের নেতাকর্মীদের ভুলে যান। সুবিধাবাদী কিছু লোক নিয়ে দলের বিরুদ্ধেই বলয় গড়ে তোলেন বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমুল নেতৃবৃন্দ। কঠোর যাচাই-বাছাই পুর্বক প্রার্থী নির্ধারন করার অনুরোধ করেন দলের সভাপতিরর কাছে।

বুধবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রুদ্ধধার বৈঠকে তৃণমূলের নেতারা এমন অভিযোগ করেন।

সাত জেলা দিনাজপুর, জামালপুর, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, গাজীপুর ও ভোলা জেলা, উপজেলা, থানা ও পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়।

সূত্র জানায়, তৃণমূল নেতাদের কাছে সরবরাহকৃত ১০টি প্রশ্নের মধ্যে রয়েছে- তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম, প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স, প্রার্থীর পেশা, দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে প্রার্থীর অবস্থান, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রার্থীর সম্পৃক্ততা, প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা, প্রার্থীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রভাব, নির্বাচনে বিজয়ের মতো প্রার্থীর আর্থিক সঙ্গতি এবং প্রার্থীর অতীতের কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তার ফল কী ।

বৈঠক সুত্র জানায়, তৃণমূল নেতারা বলেন, সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নমিনেশন দিতে হবে। এছাড়াও দল ও সরকারের সাফল্য থাকলেও প্রচার না থাকায়  মিডিয়ার তীব্র
সমালোচনা করেন তৃণমূল তারা। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপক সম্ভবনা থাকলেও দলীয় লোকজনদের বির্তকিত ভূমিকার কারণেই পরাজয় । এ পরাজয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে পোস্ট মডেম করার আহ্বান জানান গাজীপুর জেলার তৃণমূল নেতারা।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগ। এখন থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে তাহলে কোনো শক্তিই পরাজিত করতে পারবে না। আগামীতে যাকেই দলীয় নমিনেশন দিই তার পক্ষেই কাজ করতে হবে। ব্যক্তি পছন্দ নাও হতে পারে। নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। দল ও সরকারের অনেক অর্জন আছে, এগুলো সঠিকভাবে প্রচার করতে হবে। তৃণমূল নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই দলীয় নমিনেশন দেয়া হবে।

বৈঠক সুত্র জানায়, সভায় সাত জেলার প্রায় দুই শতাধিক নেতার মধ্যে শতাধিক নেতা বক্তব্য রাখেন। প্রায় প্রতিটি উপজেলার সভাপতি বা  সম্পাদক বক্তব্য রাখেন। তাদের বক্তব্যের অধিকাংশ সময়ই ছিল দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে  অভিযোগ।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সর্বাত্মক নির্বাচনী প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি তৃণমূল নেতাদের সকল ভেদাভেদ ভুলে নিজেদের মধ্যে ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে পরাজিত করা কঠিন। তাই নিজেদের মধ্যে কোনো বিভেদ, দ্বন্দ্ব-বিবাদ বা মান-অভিমান থাকলে তা এখনই ঝেড়ে ফেলতে হবে। আর নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন একজন, সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেয়া যাবে না। যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার পক্ষেই সবকিছু ভুলে কাজ করতে হবে। মনে রাখবেন, নিজেদের মধ্যে অনৈক্যের সুযোগে যদি বিএনপি-জামায়াতরা ক্ষমতায় আসে, তবে তাদের আক্রমণ থেকে কেহ-ই রেহাই পাবেন না। ২০০১ সালে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো এ অবস্থার সৃষ্টি হবে।