প্রবাসী স্বামীর সাথে প্রতারণা ও সই জাল করে স্ত্রীর আমেরিকা পাড়ি

ভেড়ামারা প্রতিনিধি: আমেরিকা প্রবাসী বোস্টন শহরে বসবাসরত সিরাজুল ইসলামের সাথে তার স্ত্রী ফারজানা রহমান প্রতারণা ও স্পন্সর রিলেশন পেপারে জাল সই দিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়ে সেখানে আত্মগোপন করে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সিরাজুল ইসলাম কনস্যুলার ভিসা ইমিগ্রেন্ট সেকশন ইউএসএ দূতাবাসে (ঢাকা) অভিযোগ করেছে। সিরাজুলের বাড়ী কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরের কাঠেরপুল গ্রামে ও স্ত্রী ফারজানার বাবার বাড়ী নওগাঁ জেলার সদর থানার শাহজাদপুর গ্রামে।
জানা গেছে, সিরাজুল ইসলাম ২০০৮ সালে ডিভি লটারীর মাধ্যমে আমেরিকাতে যায়। ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল ফারজানার সাথে সিরাজুলের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরপর স্ত্রীকে আমেরিকায় নিজের কাছে নেয়ার জন্য ভিসাসহ সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করতে থাকে। এক পর্যায়ে কাগজ পত্রগুলো স্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। শেষ পর্যায়ে ফারজানা স্বামীর সাথে প্রতারণা করে গোপনে স্পন্সর রিলেশন পেপারে সিরাজুল ইসলামের বন্ধু আমেরিকা প্রবাসী সাইফুল ইসলামের সই জাল করে গোপনে ভিসা সেকশনে জমা দেয়। অথচ সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশে আসেন ব্যক্তিগত কাজ ও স্পন্সর রিলেশন পেপারে সই দিতে। ভিসা প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে ভিসার কথা গোপন রেখে ফারজানা তার স্বামীকে জানায় দূতাবাস ভিসা দিলেই স্বামী সিরাজুলকে জানাবে। গত ২৩ আগস্ট হঠাৎ স্ত্রী ফারজানা স্বামী সিরাজুলের সাথে মোবাইলফোনে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এরপর সিরাজুল তার শ্বশুর মঞ্জুর রহমান ও শাশুড়ি রোকেয়া সুলতানার সাথে বিষয়টি নিয়ে কয়েকদফা কথা বলার চেষ্টা করলেও তারা ফোন রিসিভ করেনি। এরপর সিরাজুল আমেরিকা থেকে তার ভাই আমিরুল ইসলাম ও তার পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করে। সিরাজুলের পরিবার ফারজানার বাবার ভাড়া বাড়ি রাজশাহীতে যায় এবং বিষয়টি তাদেরকে জানায়। এ ব্যাপারে ফারজানার বাবা-মা জানান, সে কোথায় গেছে তারা জানে না। এরপর সিরাজুলের পরিবার শাহমখদুম থানায় ফারাজানাকে পাওয়া যাচ্ছে না, এ মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি অর্ন্তভুক্ত করেন।
আমেরিকা প্রবাসী সিরাজুল ইসলাম মোবাইলফোনে জানান, আমেরিকা দূতাবাসে ফারজানার (পাসপোর্ট নং- BA0066345) †Km bs- DHK 2014811013 দিয়ে এ বিষয়ে জানতে ভিসা দফতরে আবেদন করি। সেখানে জানতে পারি ফারজানা রহমান ৬ আগস্ট ভিসা উত্তোলন করেছে। এ সময় ফারজানা তার বাবার ই-মেইল ব্যবহার করেছে বলে জানা যায়। অথচ আমার ই-মেইল ব্যবহার করার কথা ছিলো। সে দেশ থেকে আমার কাছে না এসে আমেরিকায় পালিয়ে রয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত ৩১ আগস্ট আমেরিকা দূতাবাসে ফারজানার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের ভাই আমিরুল ইসলাম জানান, ফারজানার বাবা মঞ্জুর রহমানের কাছে ফোন করে আমি জানাই সাইফুল দেশে এসেছে স্পন্সর রিলেশন পেপারে সই দিতে কাগজগুলো নিয়ে আসেন। ফারজানার বাবা বলে আর সাইফুলের দরকার নেই তার আগের সই নকল করে বসিয়ে দিয়েছি। তিনি আরও জানান, গত ২১ অক্টোবর দূতাবাসে ফারজানার ভিসা সোস্যাল সিকিউরিটি, গ্রীনকার্ড বাতিল চেয়ে এবং জাল সই প্রতারণা করায় উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য আমরা একটি অভিযোগ দায়ের করেছি এবং আমাদের করণীয় কী জানতে চেয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে ফারজানার বাবা মঞ্জুর রহমানের মোবাইলফোনে ফোন করলে তিনি জানান, আমরাই পুলিশের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি সে আমেরিকা চলে গেছে। বর্তমানে আমাদের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। সই জাল করেছে কি-না এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। সে একটি চিঠি লিখে গিয়েছে। লিখেছে আমার মতো আমি আমেরিকায় চলে গেলাম তোমাদের জামাই (সিরাজুল) এর সাথে আমি সংসার করবো না। আমার খোঁজ করার দরকার নেই।