প্রধানমন্ত্রীর সাথে খালেদার সংলাপ চান বি চৌধুরী

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদা জিয়ার সংলাপের উপর জোর দিয়েছেন বিকল্পধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আজকের সরকারের মধ্যে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, প্রাইম মিস্টার হ্যাজ ম্যাক্সিমাম পাওয়ার। একমাত্র শক্তিশালী ব্যক্তি সরকারের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ করতে হবে।

১০ সংসদ নির্বাচনের আগে ভোটের সময়ের সরকার ব্যবস্থা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনকে টেলিফোন করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সংলাপে বসতে খালেদা জিয়াকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানালেও হরতালের মধ্যে সে আমন্ত্রণ রক্ষায় রাজি হননি তিনি, হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেন বিরোধী নেত্রী।

ওই ঘটনা স্মরণ করে বি. চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া সেই ‘ডায়লগ মিস’ করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করে দিয়েছেন। আজকে উনার বক্তব্য সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করে দেয়। শেষ হওয়ার আগেই বাতিল হয়ে যায়। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিদায় নিচ্ছে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির পক্ষ থেকে নানা প্রস্তাব দেয়া হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এর এখতিয়ার একমাত্র রাষ্ট্রপতির।

খালেদার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য বিএনপি এর মধ্যে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠিও দিয়েছে। এ বিষয় বিএনপি সরকারের সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রেসিডেন্টে কাছে গিয়ে কী করবেন? আমি নিজে ছিলাম, জানি। সংবিধান বলে প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী চলিবেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যা বলবেন, তাকে তা শুনতে হবে। কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

সভায় প্রধান বক্তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশনের আমরা একটা ধারণা দিয়েছি, প্রস্তাব দিয়েছি- এই নির্বাচন কমিশন এই ধরণের হলে একটা সম্ভাবনা আছে ভবিষ্যতে যদি নির্বাচনে সহায়ক সরকার করা যায়, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু প্রস্তাব উপস্থাপনের সাথে সাথে আওয়ামী লীগ তা নাকচ করে দিয়ে বলল, হবে না। আজকে আইনমন্ত্রী সাহেব বলেছেন এটার মধ্যে কিছূ নাই। ‘দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না’, তাই ‘গত বারের মতো বিনাভোটে’ আগামীতেও নির্বাচিত হওয়ার পরিকল্পনা থেকেই ক্ষমতাসীন দল বিএনপির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। আওয়ামী লীগে ভয় তারা জনগণের সঙ্গে নেই। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা জনগণের ওপর আস্থা না রেখে অস্ত্রের ওপর নির্ভর করছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জনগণকে বন্দি করে রাখার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রের সব যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে পুরোপুরি জনগণকে দমন করে যে শাসন, তা করছে। মওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার সংগ্রামকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী,  জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আলী আব্বাস খান, খালেকুজ্জামান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল বক্তব্য রাখেন।