প্রতিষ্ঠানের ৩শ শিক্ষার্থী বিপাকে : দুদিনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: অধ্যক্ষকে পদত্যাগ করার বিষয়ে পরিচালকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে বন্ধ হয়ে গেছে নভেল পলিটেকনিক অ্যান্ড টেক্সটাইল ইনিস্টিউট। গত ৩ দিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বিপাকে পড়েছে ওই প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত ৩শ’ শিক্ষার্থী। এদিকে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার প্রতিষ্ঠানটি খুলতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রধানকে আল্টিমেটাম দিয়েছে। দুই দিনের মধ্যে নোভেল পলিটেকনিক অ্যান্ড টেক্সটাইল ইনিস্টিউট না খুললে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন তিনি। এই অবস্থায় পরিচালকদের নিয়ে ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাইয়ের বাসায় গতকাল সোমবার রাতে সমঝোতা করার কথা। এ সব তথ্য জানান অধ্যক্ষ নাজমুল আলম রিগান।

জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের রফি টাউয়ারের ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ২০১০-১১ সালে ছাত্র ভর্তির মধ্যদিয়ে নভেল পলিটেকনিক অ্যান্ড টেক্সটাইল ইনিস্টিউট যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠা লগ্নে থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে একাধিক পরিচালক ছিলেন। বর্তমান পরিচালক সংখ্যা ১০।

নোভেল পলিটেকনিক অ্যান্ড টেক্সটাইল ইনিস্টিউটের অধ্যক্ষ নাজমুল আলম রিগানের নারী কেলেঙ্কারী নিয়ে পরিচালকদের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই মতবিরোধ দেখা দেয়। পরিচালকদের একটি অংশ অধ্যক্ষকে পদত্যাগ করতে বললে। তিনি পদত্যাগে অনিহা প্রকাশ করেন। এ থেকেই চরম দ্বন্দ্ব ও প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়।

অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, পরিচালকদের দ্বন্দ্ব, নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা প্রকার অভিযোগ উঠতেই থাকে। এদিকে বিনা নোটিশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়ায় ৩শ শিক্ষার্থীর বিপাকে পড়েছেন। তাদের শিক্ষা জীবন এখন অনিশ্চিত। সোমবার দুপুরে নভেল পলিটেকনিক অ্যান্ড টেক্সটাইল ইনিস্টিউট কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় মূল ফোটকে তালা ঝুলতে। এসময় অনেক শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে এস বন্ধ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যান।

একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, হঠাৎ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ায় সরকার   ঘোষিত নীতিমালা ভঙ্গ করা হয়েছে। তাদের ভাষ্য এত টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে শিক্ষা জীবন শেষ করতে না পারলে পথে বসতে হবে।

এ বিষয়ে নভেল পলিটেকনিক অ্যান্ড টেক্সটাইল ইনিস্টিউট’র অধ্যক্ষ নাজমুল আলম রিগান জানান, সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে চালু করা হবে।

 

ঝিনাইদহে বালক স্কুলের ছাত্রকে লোহার পাইপ দিয়ে পেটালেন শিক্ষক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে স্কুল ড্রেস না পরে আসায় লোহার পাইপ দিয়ে সাদমান সাইফ শরণ নামে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়েছেন শিক্ষক কামাল হোসেন। গত রোববার ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ছাত্রের অভিভাবক বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন। সাদমান সাইফ শরণ ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এতিমখানা মোড় এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে।

ছাত্রের মা শাহেদা খাতুন অভিযোগ করেন, তার ছেলে শ্রেণি শিক্ষক পলাশ কুমারের কাছ থেকে রোববার ছুটি নিয়েছিলো। ফর্ম জমা দেয়ার জন্য সে ওই দিন স্কুল ড্রেস না পরে স্কুলে যায়। এ সময় সহকারী শিক্ষক কামাল হোসেন তাকে ডেকে নিয়ে লোহার পাইপ দিয়ে মারপিট করেন। মারের চোটে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল-কালচে দাগ পড়ে যায়। এ ঘটনার দুদিন পূর্বেও ক্লাসে জোরে কথা বলা নিয়ে লোহার পাইপ দিয়ে সাদমান সাইফ শরণকে বেধড়ক পিটিয়েছে স্কুলের বাংলা শিক্ষক কামাল হোসেন। পরে স্কুল থেকে শরণকে বাড়িতে এনে চিকিৎসা দেয় হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষক কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি সমন্বয় হয়ে গেছে। এনিয়ে আর রিপোর্ট করার দরকার নেই বলে সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার অধিকারী বলেন, তিনি বিষয়টি জানার পর ওই শিক্ষককে ডেকে পাঠান। তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় সরকারের নির্দেশ আছে কোনো শিক্ষার্থীকে মারপিট করা যাবে না।

কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও প্রধান শিক্ষক জানান। এদিকে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক প্রায়ই শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। সামান্য ত্রুটি পেলেও কান ধরিয়ে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখেন।