পুলিশের উপস্থিতিতে জোরপূর্বক তালাক : দেনমোহর ও খোরপোষের টাকা ছিনতাই

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে একসন্তানের জননীকে জোরপূর্বক তালাক দেয়া হয়েছে। খোরপোষ ও দেনমোহর বাবদ টাকা দেয়ার পরপরই তা ছিনতাই হয়ে যায়। ঘটনার ১৭ দিন পরেও পুলিশের তরফে সহায়তা না পেয়ে মানবতা ফাউন্ডেশনে আবেদন করা হয়েছে।

মানবতা ফাউন্ডেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বলদিয়া গ্রামের মজিবর মোল্লার মেয়ে মর্জিনার বিয়ে হয় কুতুবপুর ইউনিয়নের আমেরচারা মাঠপাড়ার আলম হোসেনের ছেলে সোহেল রানার সাথে ৭ বছর বিয়ে হয়। তাদের সাড়ে ৩ বছর বয়সী এক পূত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে মর্জিনার ওপর নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামী পক্ষের লোকজন। গত বছরের আগস্ট মাসে যৌতুক না দেয়ায় মর্জিনাকে পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় তারা। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে আপসের মাধ্যমে মর্জিনাকে আবার ঘরে নেয় স্বামী পক্ষ। তার কিছুদিন পরেই আবার ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন স্বামী সোহেল রানা। ওই টাকা না পেয়ে শুরু করে নির্যাতন। একপর্যায়ে মর্জিনার বাবার কাছে মোবাইলফোনে কল করে ওই টাকা দেয়ার তাগাদা দেন কুতুবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আসলাম। এসআই আসলামের নানা ধরনের হুমকির কারণে গত ২৬ মে ১০ হাজার টাকা নিয়ে জামাইবাড়ি যান মর্জিনার বাবা মজিবর মোল্লা। সেখানে এসআই আসলাম ও স্বামী সোহেল হুমকি-ধামকি দিয়ে তালাক দিতে বাধ্য করেন মর্জিনাকে। মর্জিনার বাবার কাছে থেকে ১০ হাজার টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জোরপূর্বক তালাক দেয়া হয়। এই কাজের জন্য এসআই আসলাম বকসিস নেন ১ হাজার টাকা। পরে মর্জিনার দেনমোহর ও খোরপোষ বাবদ ৭৯ হাজার টাকা দেন স্বামী সোহেল। মজিবর মোল্লা তার মেয়ে ও নাতি ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রওনা দেয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে ওই টাকা ছিনতায়ের ঘটনা ঘটে। মজিবর মোল্লাকে আলমসাধু থেকে নামিয়ে পার্শ্ববর্তী পানবরজের মধ্যে নিয়ে কাছে থাকা ৭৯ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন সোহেল রানা ও মহিউদ্দিন। এ সময় মজিবরকে চুপ করে বাড়ি ফেরার হুমকি দেয় তারা। পরে ছিনতায়ের ঘটনা ফাঁড়ি পুলিশে জানানোর ১৭ দিন পার হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ। গতকাল এ বিষয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. মানি খন্দকার বরাবর একটি আবেদন করা হয়েছে।