নির্যাতিত দু নারীর পাশে জেলা লোকমোর্চা

 

স্টাফ রিপোর্টার: জেলা লোকমোর্চা টিম গতকাল সোমবার নির্যাতিত দুজন নারীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে লোকমোর্চা টিম জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের এক নির্যাতিতা নারীর বাড়িতে যায়। পরে ৬২ আড়িয়া গ্রামের আরো এক নারীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য লোকমোর্চা টিম ওই গ্রামও পরিদর্শন করে। পৃথক এ দুটি ঘটনার ব্যাপারে লোকমোর্চা টিম নির্যাতিত ওই দু নারীর পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।

জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী এক ষোড়শী সম্প্রতি তার আত্মীয়বাড়ি সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে বেড়াতে যায়। ওই গ্রামের মিস্ত্রিপাড়ার আবু সিদ্দিকের ছেলে রেজাউল হক রেজার (২৫) সাথে তার আগে থেকেই মোবাইলে প্রেমসম্পর্ক ছিলো। এ সম্পর্কের সূত্র ধরে রেজাউল হক রেজা মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক দিন তার দেহভোগ করে। পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করে রেজা। এতে দিশেহারা প্রতিবন্ধী মেয়েটি আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য জেলা লোকমোর্চার কাছে আবেদন করে। জেলা লোকমোর্চা টিম গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর গ্রামে রেজাউল হক রেজাদের বাড়িতে যায়। ওই সময় রেজা বাড়িতে ছিলেন না। তার মোবাইলে ফোন করে ডাকা হলেও তিনি বাড়ি না এসে বলেন, আমি অনেক দূরে আছি। এখন যেতে পারবো না। এ সময় বাড়িতে উপস্থিত রেজার পিতা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এ ঘটনা নিয়ে গ্রামে দু’বার সালিস বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে রেজা উপস্থিত ছিলো না। তিনি জানান, রেজার সাথে কথা বলে তিনি লোকমোর্চা অফিসে যাবেন। গ্রামের অনেকে লোকমোর্চ টিমের সদস্যদের বলেন, নানা অজুহাতে রেজা ও তার পরিবারের লোকজন কালক্ষেপণ করছে। সহজ-সরল প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে রেজা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে বলেও গ্রামে অনেকে শুনেছেন বলে জানান।

এরপর লোকমোর্চা টিম ৬২ আড়িয়া গ্রামে সংখ্যালঘু এক বাড়িতে গিয়ে ওই পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে। সম্প্রতি গ্রামের খবির উদ্দিনের ছেলে ইছা (৫৫) রাতের অন্ধকারে গ্রামের এক সংখ্যালঘু পরিবারের বিধবা গৃহবধূ বাড়িতে যায় অসৎ উদ্দেশে। ওই গৃহবধূ তার ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই গৃহবধূর মাথার বালিশ ধরে টান দিলে গৃহধধূ চিৎকার করেন। এ সময় গৃহবধূর ছেলে হাতেনাতে ইছাকে ধরে ফেলে। পরে গ্রাম্য সালিসে ইছাকে শাস্তি প্রদান করে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়। লোকমোর্চা টিমের সদস্যরা ওই পরিবারের সাথে কথা বলে সংখ্যালঘু ওই পরিবারের পাশে থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করে।

লোকমোর্চা টিমে ছিলেন জেলা লোকমোর্চার নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মানিক আকবর, লিটু বিশ্বাস, জুলিয়াস মিল্টু, সদর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস, সহসভাপতি সাহানা ইউছুপ কেয়া, নির্বাহী সদস্য মমতাজ রোজি, লোকমোর্চার সচিব শাহনাজ পারভীন শান্তি ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহসাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার কুণ্ডু।