নারায়ণগঞ্জে ওয়াসার পানি পানে চারজনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলায় ওয়াসার ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি পান করে গতকাল শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। তবে স্থানীয় জনগণ ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরগণ চারজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন জানান, নারায়ণগঞ্জে কেউ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়নি। তবে একজনের মৃত্যুর খবর তিনি শুনেছেন। এদিকে ওয়াসার পানি পান করে শুক্রবার পর্যন্ত দু শতাধিক মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিম পঞ্চাশজনকে চিকিৎসা দিয়েছে।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে পানি সরবরাহ করে ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু তাদের সরবরাহ করা পানিতে প্রায় সময়েই পাওয়া যাচ্ছে ময়লা আবর্জনা। অনেক এলাকাতেই ওয়াসার সরবরাহ করা এসব পানি ব্যবহারের অনুপযোগী। বন্দরের লক্ষণখোলা এলাকায়ও গত কয়েকদিন ধরে ময়লা পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বিষয়টি ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েকদিন থেকে ওয়াসা দুর্গন্ধযুক্ত পানি সরবরাহ করছে। অধিকাংশ এলাকায় ওয়াসার পানির পাইপ লাইনের সাথে ড্রেনেজ লাইন মিলে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত চারদিন ধরে পানি পান করে লক্ষণখোলা এলাকার লোকজন পানিবাহিত রোগ ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হতে থাকে। বেশিরভাগই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। স্থানীয়দের হিসাব মতে, গত দু দিন লক্ষণখোলা এলাকার দু শতাধিক মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হন। যাদের মধ্যে অর্ধশতের অবস্থা গুরুতর ছিলো। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে এলাকাবাসী। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন জানান, তিনি চারজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। স্থানীয় লোকজন সে তথ্যই জানিয়েছে। মৃতরা হলেন- লক্ষণখোলা এলাকার ফিরোজা বেগম (৭৫), আফসার আলী (৬৫), রেহানা বেগম (২৮) ও সিরাজুল ইসলাম (৬০)। নিহত লক্ষণখোলা এলাকার শহীদুল্লাহ ও রমিজ মিয়ার চাচাত বোন ফিরোজা বেগম গাজীপুর থেকে তাদের বাড়ি বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার রাতে পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সকালে আইসিডিডিআরবি নেয়া হয়। দুপুরে তিনি মারা যান। বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বদরুন নাহার খান বন্যা বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আরও কেও মারা গেছে কিনা তার খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. দুলাল চন্দ্র চৌধুরী জানান, লক্ষণখোলা এলাকায় দুটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।