নবাব পরিবারের মেয়ে সাদিয়া মঈনের সহযোগিতায় ৯শ মানুষ কৃত্রিম পা সংযোজন : আলমডাঙ্গার ৮ জন

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ভারতের রাজস্থানের নবাব পরিবারের মেয়ে সাদিয়া মঈনের সহযোগিতায় সারাদেশে ৯শ মানুষ কৃত্রিম পা নিয়ে কর্মমুখী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ইতোমধ্যে আলমডাঙ্গার ৮ জনসহ সারাদেশে ৪শ মানুষের কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়েছে।

জানা গেছে, ভারতের রাজস্থানের নবাব পরিবারের মেয়ে সাদিয়া মঈন। বৈবাহিক সূত্রে বর্তমানে বাংলাদেশে বাস। শিল্পপতি-উদ্যোক্তা আসিফ মঈনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সাদিয়া মঈন এদেশে আছেন প্রায় ২০ বছর। সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত অনেক বছর ধরে। তবে এবার তিনি যে র্কীতি করেছেন তা মনে রাখার মতো। তার কল্যাণে প্রায় ৯শ মানুষ বিনামূল্যে কৃত্রিম পা ফিরে পেতে যাচ্ছেন। জয়পুরের ভগবান মহাবীর বিকলাঙ্গ সহায়তা সমিতির তৈরি বিখ্যাত ‘জয়পুর ফুট’র কৃত্রিম পা দিয়ে আবারো কর্মমূখী হবার স্বপ্ন দেখছেন বিভিন্ন দুর্ঘটনায় পা হারানো ওইসব মানুষেরা। সাদিয়া  মঈন বিভিন্ন সময়ে নিভৃতে পরিচালনা করেছেন বিভিন্ন সামাজিক কাজ। বাংলাদেশে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় কতজন অঙ্গ হারিয়েছেন, তার পরিসংখ্যান জানা নেই এই রাজকন্যা সাদিয়ার। তবে রানা প্লাজার মতো ভবন ধ্বসে বিপুল মানুষের অঙ্গহানির ঘটনা তিনি দেখেছেন গণমাধ্যমের সুবাদে। বিকলাঙ্গ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি বাংলাদেশ অর্থপেডিক সোসাইটির কাছে প্রস্তাব দেন। অসহায় মানুষদের শরীরে জয়পুরের ‘জয়পুর ফুট’ সংযোজনে যাবতীয় ব্যয়ভার বহনেরও প্রস্তাব দেন সাদিয়া মঈন। সাইদা তার চাচা নবাব পরিবারে সদস্য ও রাজস্থানের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নবাবজাদা আইমাদুদ্দিন আহমেদ খানের সহায়তায় ৫ শতাধিক অসহায় মানুষকে কৃত্রিম পা দেয়ার প্রস্তুতি নেন। এরপরে বিভিন্ন পর্যায়ে আরও ৪শ জনকে ওই সহায়তার আওতায় নিয়ে আসা হয়।

৫ শতাধিক মানুষকে কৃত্রিম পা দেয়ার প্রস্তুতির বাইরে নতুন করে আরও ১শ জনকে অর্ন্ত:ভুক্ত করা হয়েছে। তবে বিশেষ বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে আরো ৩শ জনকে বিনামূল্যে কৃত্রিম পা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে ‘বিএমভিএসএস’। যার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবেন সাদিয়া মঈন ও স্বামী আসিফ মঈন।

‘বিএমভিএসএস’ মুখপত্র প্রকাশ ভাণ্ডারী বলেন, জয়পুর ফুট বিশ্বের ২৭টি দেশে কৃত্রিম পা সংযোজন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অসহায় মানুষদের কৃত্রিম পা সংযোজন করতে পেরে আমরা আনন্দে অভিভূত। এদেশে ‘কৃত্রিম পা’ তৈরিতে দক্ষতা বাড়াতে জয়পুরে নিয়ে এবং এদেশে এসেও তাদের টেকনিশিয়ানরা ট্রেনিং সহায়তা দেবেন বলেও জানান ‘বিএমভিএসএস’ কর্মকর্তারা।

এদিকে, গত ২৬ ও ২৭ মে ২ দিনে  মোট ৪শ জনের কৃত্রিম পা সফলভাবে সংযোজন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ জন আলমডাঙ্গা এলাকার। এরা হলেন- ইসমাইল হোসেন, হামিদুল ইসলাম, মারফত আলী, ফরিদা খাতুন, আলমগীর হোসেন, ইদ্রিস আলী, আসমা খাতুন ও হাশেম আলী। এদের কৃত্রিম পা সংযোজনের জন্য নিটোরে যোগাযোগসহ যাবতীয় সহযোগিতা করেছে কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আল আসিফ সুপ্ত, শেখ রাশেদ মার্শাল ও আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রজন্মলীগ আহ্বায়ক নাজমুল হুসাইন, আকাশ, রোমিও, তপন, রানা, তন্ময় ও সাইফুল। এ ব্যাপারে হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।