দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় রাজনৈতিক সমঝোতা দরকার

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সাথে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। একটি নির্বাচন হয় ৫ বছরের জন্য। সরকার ৫ বছর থাকার চেষ্টা করে। আমরা কখনো বলিনি, সংলাপের প্রয়োজন নেই। অবশ্যই একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে, এ জন্য আলোচনা হবেই। অপরদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দশম সংসদ নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে সিদ্ধ, কিন্তু রাজনীতিকভাবে সিদ্ধ হয়নি। কোনোভাবেই তা জনপ্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন নয়। সবার অংশগ্রহণে ভোট নিশ্চিত করতে না পারলে নির্বাচনে ভোটাধিকার থাকবে না। বিরোধী জোটবিহীন নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোন পথে যাচ্ছে- তার বিশ্লেষণে গতকাল শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। সভায় অধিকাংশ আলোচকই স্থিতিশীলতা রক্ষায় রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর জোর দেন।

বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সমালোচনা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপি এবার অংশ নিলো না, আগামীবার আওয়ামী লীগ যদি অংশ না নেয় , তখন কি হবে? এটা কি চলতে থাকবে? বিএনপি একটি প্রস্তাব মেনে নিয়ে আরেকটি প্রস্তাব দেয়নি। এতগুলো দায়িত্ব তো আওয়ামী লীগ নিতে পারে না। তিনি বলেন, দেশ স্থিতিশীল থাকবে, বিনিয়োগ হবে। দেশ স্বাভাবিক হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য হবে, রপ্তানি বাড়বে। দেশ এগিয়ে যাবে। উন্নয়নের পথে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে বিএনপি সহযোগিতা করবে, আশা করি। রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে দেশের অগ্রগতির জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, জনপ্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন হলেই দেশে স্থিতিশীলতা আসবে। এ জন্য বিএনপির দরকার নেই। দশম সংসদ নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধ হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, এই অবস্থা চললে জনগণের ভোটাধিকার ফিরে আসবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বিএনপি তো পরিষ্কার করেছে, জামায়াত তাদের সঙ্গে থাকবে। আওয়ামী লীগ যদি অগ্রসর না হয়, তাহলে আরো বিপদ বাড়বে। আওয়ামী লীগ কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে না?

অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্যে সমঝোতার বিকল্প নেই। কিভাবে সমঝোতা হবে, তা বের করতে হবে। এ বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি করতে হবে। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনে এসে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ধারায় ছেদ ঘটেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসি সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতাও বড় কাম্য।

শিক্ষক ও কলামিষ্ট সলিমুল্লাহ খান বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবার সহিংসতা হয়েছে। এক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মাত্রা বাড়িয়েছে। এখন ভোটের আগে শুধু নির্বাচন নিয়ে একটি পদ্ধতি চালু করা যায় কি না, ভাবতে হবে।

সভা সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালিদী। অংশ নেন মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম, নিজেরা করি’র প্রধান খুশি কবির, সাবেক কূটনীতিক নাসিম ফেরদৌস, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর প্রমুখ।