দু দেশের দু কর্তার জীবননগর স্থলবন্দর পরিদর্শন

বাংলাদেশ ও ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের দু চেয়ারম্যানের জানানো হয় স্বাগত

 

এম আর বাবু ও সালাউদ্দীন কাজল: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দরটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করার ব্যাপারে সম্ভব্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের দু চেয়ারম্যান গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জীবননগর দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দর এলাকা ও অবকাঠামোগত দিক পরিদর্শন করলেন। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি, বিজিবি কমান্ডার, পুলিশ সুপার, এডিএম, কাস্টমস কর্মকর্তার সমন্বয়নে গঠিত প্রতিনিধি দলটি এ সময় ভারতের জিরো লাইন পরিদর্শনে গেলে বিএসএফ’র কর্মকর্তারা তাদেরকে স্বাগত জানিয়ে ভারত অভ্যন্তরের টুঙ্গিতে নেন। উভয় দেশের সিঅ্যান্ডএফ ও এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দসহ সাংবাদিকবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোয়েজ্জদ্দীন আহমেদ, ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ওয়াই এস সাচরাওয়াত ও বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মি. আর মাসাকুই বেলা ১টার দিকে দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দরের চ্যাংখালী সীমান্তে এসে পৌঁছুলে দৌলৎগঞ্জ ক্লিয়ারিং অ্যান্ডফরোয়ার্ডিং ও আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি নাসির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এম আর বাবু, নির্বাহী সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, সাইদুর রহমান ধুন্দু, সোহরাব হোসেন খান, আ. সালাম ইশা, ওয়াসিম রাজা ও সেলিম উদ্দিন তাদেরকে পূষ্পমাল্য দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়। এ সময় চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল গাজী মো. আসাদুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রহিম শাহ্ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম, জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তূজা, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাজেদুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা কাস্টমন এক্সাইজ ভ্যাট বিভাগের সহকারী কমিশনার বিভাগীয় কর্মকর্তা রিয়াদুল ইসলাম ও দর্শনা স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার কাজী বজলুর রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রতিনিধি দলটি জিরো লাইনে গেলে বিএসএফ ১৭৩ ব্যাটালিয়নের উপঅধিনায়ক মেজর রাজেন্দ্র কুমার ও টুঙ্গি ক্যাম্পের কমান্ডার ইন্সপেক্টর সতীন্দার সিং প্রতিনিধি দলটিকে স্বাগত জানান। এ সময় ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের বাবলু বিশ্বাস, প্রদীপ মিত্র, বাদল ভক্ত, বিষ্ণুপদ বিশ্বাস, হরেকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রমুখ নেতৃবৃন্দ এ সময় এ স্থলবন্দরটি চালুর ব্যাপারে জোর দাবি জানান। তারা এ বন্দরটির চালু হলে উভয় দেশ লাভবান হবে এমন প্রমাণ উত্থাপন করেন। প্রতিনিধি দলটি চ্যাংখালী সীমান্তে ফিরে এলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব মোয়েজ্জদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ভারতীয় স্থল বন্দর অথরিটির চেয়ারম্যান এ বন্দরটির বিভিন্ন দিক দেখলেন। তিনি সব কিছু দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দেশে ফিরে তিনি ভারতীয় অংশ চালুর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অপরদিকে ভারতীয় স্থলবন্দর অথরিটির চেয়ারম্যান মি. ওয়াই এস সাচরাওয়াত তার মতামত তুলে বলেন, চমৎকার প্লেস। সব দিক দিয়ে সুবিধাজনক একটি স্থান। ৪৮ বছর পূর্বে বন্ধ হওয়া এ বন্দরটি কেন এতোদিন চালু করা হয়নি তা দেখে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। দেশে ফিরে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলেন সাংবাদিকদের জানান।

উল্লেখ্য, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান গত ২৪ আগস্ট উপজেলার দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দরটি উদ্বোধন করেন। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এটির ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হলেও ভারতীয় অংশে মাজদিয়া স্থলবন্দরের এখনও উদ্বোধন করা হয়নি। এ কারণে স্থলবন্দরের কার্যক্রম পূর্নাঙ্গভাবে চালু হয়নি।

সূত্রমতে দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া শুল্কস্টেশন ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৪৭ সালে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এ চেকপোস্টের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলেও ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। পরে এ শুল্ক স্টেশনের লোকবল অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। ২০০৮ সালে এ স্থলবন্দরটি পুররায় চালু করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। সর্বশেষ গত ৩১ জুলাই সরকার এটিকে স্থলবন্দর হিসেবে গেজেটভুক্ত করেন।