দামুড়হুদা উপজেলা প.প. কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ : স্ট্যান্ডরিলিজ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে তাৎক্ষণিক বদলি হওয়া বহুল আলোচিত চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা প.প. কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো তার পুরোনো কর্মস্থলে ফিরে আসার লক্ষ্যে জোর তৎবির শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ২৪ অক্টোবর তার পরিবর্তিত কর্মস্থল মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলায় যোগদান করেই তার পরদিন থেকেই তিনি ওই অপতৎপরতা শুরু করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মস্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব ও পরিচালক (প্রশাসন) মো. ফজলুল হক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা প.প. কর্মকর্তা  আব্দুল হান্নানকে প্রশাসনিক কারনে তাৎক্ষণিক মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলায় বদলি করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে মো. আব্দুল হান্নান ১০ বছর যাবত দাপটের সাথে দামুড়হুদা উপজেলা প.প. কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে মেডিকেল অফিসারের (এমসিএইস) দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ সময়ে তার অধীনস্থ কর্মচারী-কর্মকর্তাগণ তার ভয়ে সর্বদায় তটস্থ থাকতেন। এছাড়া তাদেরকে অনেক নিপীড়নও সহ্য করতে হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা প.প. কর্মকর্তা হিসেবে কর্মকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ভুয়া বন্ধ্যাকরণ রোগীর জটিলতা দেখিয়ে টাকা উত্তোলন, জোর করে স্টাফদের স্বাক্ষর নিয়ে বিবিধ বিলের টাকা উত্তোলন, স্টকরেজিস্টারে স্বাক্ষর করে কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বৈদ্যুতিক পাখা কেনার টাকা আত্মসাৎ, মেরিস্টোপস ক্লিনিক কর্তৃক বন্ধ্যাকরণ রোগী প্রতি প্রদেয় ১শ টাকা হারে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও পরিবার কল্যাণ সহকারীদেরকে না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ, কপার্টি (আইইউডি) রোগী প্রতি পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকাদের কাছ থেকে টাকা আদায়, স্টাফদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতা উত্তোলন করতে প্রকার ভেদে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকাদের কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা, পরিবার কল্যাণ সহকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা, এমএলএসএস ও আয়াদের কাছ থেকে ৫শ টাকা হারে কমিশন আদায় করা, স্টাফদের কাছ থেকে টিএ বিল বাবদ শতকরা ৪০ ভাগ হিসেবে টাকা আদায়, এমএসআর টাকা উত্তোলন করে ভুয়া বিল ভাউচার দাখিল ও গরিব ও দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত ওষুধ আত্মসাৎ, অডিট আপত্তির নামে স্টাফদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা তুলে আত্মসাৎ, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সায়রা বানুকে জোর পূর্ব্বক অবসরোত্তর ছুটিতে পাঠানো, পরিবার কল্যাণ সহকারী বিপাশা খাতুনকে তার চাকরিতে সমস্যা আছে ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে প্রতিমাসে মাসোহারা আদায়। পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো পরিচালনার জন্য বরাদ্ধকৃত স্টেশনারী সামগ্রী সরবরাহ না করে ওই খাতের টাকা আত্মসাৎ, অধীনস্থরা কোনো সময় তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গেলে দম্ভকরে তাদেরকে ভয় দেখিয়ে বলে এ পর্যন্ত ৮ জনকে চাকরিচ্যুত করেছি। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা শহরের ঈদগা পাড়ায় তার বিশাল আলিশান বাড়ি রয়েছে। প্রতি ৬ মাস পর পর এ বাড়ির পুরো আসবাবপত্র তিনি পরিবর্তন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত  আব্দুল হান্নানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। চুয়াডাঙ্গা প.প বিভাগের উপ পরিচারক রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষণিক বদলির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।