দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় ইউএনওর হস্তক্ষেপে তিনটি বাল্যবিয়ে ভেস্তে গেছে। গতকাল সোমবার দামুড়হুদার দর্শনা পরানপুর, পীরপুরকুল্লাহ ও দেউলী গ্রামে আয়োজন করা হয় বাল্যবিয়ের। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল হালিম ছুটে যান বিয়ে বাড়িতে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে কনে ও তার পরিবারের লোকজনসহ বাড়িতে আসা বরযাত্রিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আটক করা হয় বর সুজন এবং ফরহাদকে। তাদের উভয়কে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া কাজী কুতুব উদ্দীন মুচলেখা দিয়ে এ যাত্রায় পার পেয়েছেন।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার পরানপুর গ্রামের আব্দুল করিমের নাবালিকা কন্যা ৯ম শ্রেণির ছাত্রী চাঁদনীর (১৫) সাথে গতকাল সোমবার দুপুরে জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের করিম উদ্দীনের ছেলে সুজনের (১৯) বাল্যবিয়ের আয়োজন করা হয়। খবর পেয়ে বিয়ে বাড়িতে ছুটে যান দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হালিম। তিনি বর-কনের জন্মসনদ দেখতে চাইলে পালিয়ে যায় কনের পিতাসহ পরিবারের লোকজন। এ সময় তিনি বর সুজনকে আটক করেন। একই সময়ে কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পীরপুরকুল্লাহ গ্রামের আশাদুল হকের নাবালিকা কন্যা সোনিয়ার (১৭) সাথে দামুড়হুদা বাজারপাড়ার মতিয়ার রহমানের ছেলে ফরহাদের (১৮) বিয়ের আয়োজন করা হয়। খবর পেয়ে তিনি বিষয়টি যাচায়ের জন্য তাৎক্ষনিকভাবে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্টকে জানান। পরে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বর ফরহাদকে সাথে নিয়ে হাজির হয় ইউএনওর কার্যালয়ে। এছাড়া দামুড়হুদার দেউলী গ্রামের আব্দুল আলিমের নাবালিকা কন্যা আলেয়া খাতুনের (১৪) বিয়ের আয়োজন করা হয়। খবর পেয়ে তিনি ছুটে যান ওই বিয়ে বাড়িতে। এ সময় কনের পিতা-মাতাসহ বরপক্ষ পালিয়ে যায়। ডেকে আনা হয় সংশ্লিষ্ট কাজী কুতুব উদ্দীনকে। পরে তিনি ঘটনার বিস্তারিত শোনেন এবং বাল্যবিয়ে করতে যাওয়ার অপরাধে বর সুজন এবং ফরহাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। সেই সাথে জীবনে আর কখনও বাল্যবিয়ে পড়াবোনা বলে কাজী কুতুব উদ্দীনকে মুচলেখা দিতে বলা হলে তিনি মুচলেখা দিয়ে মুক্ত হন। দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আব্দুল হাকিম, এএসআই মাহফুজ, সিএ জহিরুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা শফিউল কবির ইউসুফ, ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মুনসুর আলী ও মাবুদ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কাজে সহযোগিতা করেন। এদিকে একই দিনে তিনটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে সাহসী ভূমিকার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভারপ্রাপ্ত ইউএনও আব্দুল হালিমকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।