দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির কমিটি মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ হয়নি সাধারণসভা : নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন কারা?

দর্শনা অফিস: দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৬ জানুয়ারি। আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে ক্ষমতার মেয়াদ। এখনও হয়নি সাধারণসভা। নির্বাচনের দিনক্ষণ হয়নি নির্ধারণ। বাকি সময় দায়িত্ব পালন করবে কারা? গত নির্বাচন মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে-ভাগে প্রস্তুতি নেয়া হলেও এবারের চিত্রটা তার উল্টো। গত ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনের ৩ বছর পূর্ণ হলেও সাধারণসভার কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে কয়েক প্রার্থী মাঠ চষতে শুরু করেছেন। সাম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে নতুনরাই বেশি। ১৮৬২ সালে বর্তমানে দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশন প্রতিষ্ঠা হয়। ঢাকা-কোলকাতা সারাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের মধ্যদিয়েই শুরু হয় স্টেশনের কার্যক্রম। দর্শনা স্টেশন প্রতিষ্ঠার পরপরই গড়ে ওঠে দর্শনা রেলবাজার। ১-২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বাজার শুরু হলেও বর্তমানে দর্শনা রেলবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। বাজার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার কমিটি না থাকলেও ব্যবসায়ীরা মুরুব্বিদের মেনে চলতো। বয়োজ্যেষ্ট ব্যবসায়ীকে অভিভাবক হিসেবে সম্মান করা হতো। বাজার প্রতিষ্ঠার ১৩৮ বছরেও কোনো প্রকার নির্বাচন ও মনোনীত কমিটি গঠন হয়নি। ২০০০ সালের দিকে প্রথম নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন হাজি খন্দকার শওকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রাবেক সরকার। এরপর টানা ১ যুগ বাজারে কোনো নির্বাচন হয়নি। ২০১২ সালের শুরুর দিকে বাজারের ব্যবসায়ীরা জেগে ওঠে নির্বাচনের জন্য। শুরু হয় নির্বাচনের কাযক্রম। পুরো বাজারের ব্যবসায়ী হয়ে ওঠে নির্বাচন মুখী। একপর্যায়ে ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি বাজারে সভার মাধ্যমে গঠন করা হয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। হাজি আজির বক্সকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে গঠন করা হয় ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। সে নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সাবির হোসেন মিকা। সে নির্বাচনের ৩ বছর না পেরুতেই ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় গঠন করা হয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এ কমিটির অন্যান্যদের মধ্যে পরিবর্তন থাকলেও অপরিবর্তীত থাকেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাজি আজির বক্স। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ৩য় বারের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি। সে হিসেব মতে গত ১৬ জানুয়ারি দোকান মালিক সমিতি নির্বাচনের ৩ বছর পূর্ণ হয়। বিগত কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণের শেষ হওয়ার আগেই সাধারণসভার আয়োজন করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সে রকম রেষ রয়েই গেছে। ফলে এবার সাধারণসভার কোনো সাড়াশব্দ না থাকায় অনেকেই হতাশ হলেও যুক্তিযুক্ত কারণ দেখিয়েছে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এ দিকে দর্শনা দোকান মালিক সমিতির ৪র্থ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার প্রস্তুতি নিয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। বর্তমান সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেনসহ নতুনদের মধ্যে সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে টিপু সুলতান ও হারুন অর রশিদের নাম। বর্তমান সাধারণ সম্পদক সাবির হোসেন মিকা, গতবারের পরাজিত প্রার্থী লিটনসহ নতুনদের মধ্যে রয়েছে মুনজুর মোর্শেদের নাম। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদের প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে। কেউ কেউ ছবি সংবলিত ডিজিটাল ব্যানার টাঙিয়ে নিজেকে প্রার্থী জানান দিয়েছেন। আবারও কেউ জানান দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে। এ ছাড়া অনেকেই নিরব প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। যতোই দিন যাচ্ছে সাম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় ততই যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। এ দিকে ব্যবসায়ীদের অনেকেই দাবি তুলে বলেছেন, দোকান মালিক সমিতির ভোটার যেন শুধুমাত্র ব্যবসায়ীরাই হয়। বহিরাগতরা যাতে এ সমিতির ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হতে না পারে সেদিকে খেয়াল রেখে ইতঃপূর্বের যে সকল বহিরাগত ভোটা হয়েছে তাদেরকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাবির হোসেন মিকা জানিয়েছেন আগামী ২১ মার্চ সাধারণসভা অনুষ্ঠিত হবে। মেয়াদ শেষের ব্যাপারে তিনি বলেছেন, গঠনতন্ত্র মোতাবেক বর্তমান পরিষদ আগামী নির্বাচনে নির্বাচিত পরিষদকে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। ফলে সে পর্যন্ত বর্তমান পরিষদ দায়িত্ব পালন করবে। মেয়াদ উত্তীর্ণের ৩ মাস আগে থেকে শুরু করা হয়েছে নতুন ভোটার তালিকা তৈরিসহ প্রয়োজনী কার্যক্রম। এছাড়া পুরাতন ভোটারদের ক্ষেত্রে মাসিক চাঁদা পরিশোধ করলে তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত হবে। অন্যাথায় ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়া হতে পারে। এছাড়া নুতন ভোটারদের ক্ষেত্রে দোকান ঘরের চুক্তিনামার ফটোকপি, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, ট্রেড লাইসেন্সসহ ছবি জমা দিতে হবে।